ডিসেম্বরে ওয়ান স্টপ ডিজিটাল সার্ভিস ও আধুনিক ল্যান্ডিং পেজ চালু করবে ডিএসই
ঢাকা, ২৬ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস): ডিসেম্বরের মধ্যেই ওয়ান-স্টপ ডিজিটাল সার্ভিস চালু এবং আধুনিক ল্যান্ডিং পেজ উন্মোচন করবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (ডিএসই। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে ডিএসই’র নিজস্ব প্রযুক্তিগত সক্ষমতায় তৈরি স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেমে (এসএসএস) নতুন ‘রেগুলেটরি সাবমিশন মডিউল ও সিএসই অনবোর্ডিং’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানানো হয়।
আজ নিকুঞ্জের ডিএসই টাওয়ারের মাল্টিপারপাস হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কোম্পানি সচিব ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের উপস্থিতে এ সিস্টেমের উদ্বোধন করা হয়। ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসইসি’র কমিশনার মোঃ সাইফুদ্দিন।
তিনি বলেন, নতুন এ প্ল্যাটফর্ম বাজার-সংশ্লিষ্ট তথ্যের মানোন্নয়ন, সহজ, স্বচ্ছ ও মানসম্মত তথ্যের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করবে। যা নিয়ন্ত্রক, অডিটর ও অন্যান্য অংশীজনের তথ্য ব্যবহারের দক্ষতা বাড়াবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সাইদ কুতুব বলেন, পুঁজিবাজারের ডিজিটালাইজেশনে এটি বড় অগ্রগতি। স্বচ্ছ তথ্যপ্রবাহ বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।
ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি) এর নির্বাহী পরিচালক নাবিল জে আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিনের ম্যানুয়াল কাজ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় আসায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়বে। তিনি জানান, এফআরসি নিজস্ব এআই ডাটাবেস তৈরি করছে।
ডিবিএ’র প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, ডিএসই’র নতুন প্ল্যাটফর্ম তথ্যপ্রবাহ, বিশ্লেষণ ও বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে শক্তিশালী করবে। বিদেশের তুলনায় স্থানীয় তথ্যপ্রাপ্তি কম হওয়ায় এই প্ল্যাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ডিএসই’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আসাদুর রহমান এফসিএস স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ডিএসই’র ডিজিটাল সাবমিশনের ভিত্তি অনেক আগে থেকেই তৈরি। নতুন মডিউল যুক্ত হওয়ায় কোম্পানিগুলো এখন সম্পূর্ণ অনলাইনে ডকুমেন্ট দাখিল করতে পারবে। যা বাজার পরিচালনায় স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও গতি বাড়াবে।
তিনি আরও জানান, ডিসেম্বরের মধ্যেই ডিএসই ওয়ান-স্টপ ডিজিটাল সার্ভিস চালু এবং আধুনিক ল্যান্ডিং পেজ উন্মোচন করবে।
বিএসইসি’র প্রধান হিসাব রক্ষক খায়রুল আনাম খান বলেন, ডিজিটাল সাবমিশন কার্যক্রমের ফলে বিভিন্ন হিসাব বিবরণী জমা সহজ হবে এবং পর্যায়ক্রমে আরও সুবিধা যুক্ত করা হবে।
ডিএসই’র প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মোঃ আসিফুর রহমান জানান, সিস্টেমটি জাভা-মাল্টি-টায়ার আর্কিটেকচার, স্প্রিং বুট, জাভাস্ক্রিপ্ট, পোস্টগ্রেএসকিউএল ও পাওয়ার বিআই দিয়ে ‘এজাইল স্ক্রাম’ পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে। এটি স্টেকহোল্ডারদের জন্য একক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে এবং ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ার জটিলতা দূর করবে।
বিএপিএলসি নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ কায়ছার হামিদ বলেন, দ্বৈত সাবমিশনের যুগ অবসান হলো। এখন তথ্য সরাসরি সোর্স থেকে জমা হওয়ায় ত্রুটির ঝুঁকি কমবে।
ডিএসই পরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (অব.) বলেন, অল্প প্রশিক্ষণে নিজস্ব উদ্যোগে সিস্টেম তৈরি করা ডিএসই ও সিএসই-এর প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রতিফলন। তিনি কম খরচে নিজস্ব ডিজিটাল উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আজ থেকে আর্থিক বিবরণী, মূল্য সংবেদনশীল তথ্যসহ সব নথি শুধুই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গ্রহণ করা হবে। হার্ড কপি সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে। এটি স্টেকহোল্ডারদের সময়-বাঁচানো, ব্যয়-সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব সমাধান হিসেবে কাজ করবে।