চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আজ বিপুল সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণে বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে অনুষ্ঠিত জানাজায় বিএনপির নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। জানাজা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন মসজিদ কমিটির উদ্যোগে আজ বিকেল ৩টার দিকে গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের এলাকার মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি নগর ও জেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আসরের নামাজের পর বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ ময়দানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা নামাজে জানাজায় অংশ নিতে শত শত মানুষ সমবেত হন। জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিব ও প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ জানাজায় ইমামতি করেন। বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত বিপুল সংখ্যক মানুষ জমিয়াতুল ফালাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকায় জড়ো হন। শীতের কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সকাল থেকেই মানুষ জানাজায় অংশ নিতে ময়দানে উপস্থিত হতে থাকেন। সারাদিনই জমিয়াতুল ফালাহ ময়দান এলাকায় জনসমাগম লক্ষ্য করা গেছে।
উপস্থিত নেতাকর্মীরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জোহরের নামাজের পর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফেজ আবু দাউদ মোহাম্মদ মামুন। জানাজা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক সাইফুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজাকে ঘিরে সৃষ্টি হয় অভূতপূর্ব জনসমাগম। দলীয় সীমারেখা ছাপিয়ে সর্বস্তরের মানুষের ঢলে পুরো উপজেলার প্রাণকেন্দ্র কেরানীহাট এলাকা কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
গায়েবানা জানাজায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর পাশাপাশি জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। একই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে থাকা সাধারণ মানুষ, বয়স্ক মুসল্লি, যুবকদের উপস্থিতিও চোখে পড়ে।
গায়েবানা জানাজার নামাজে ইমামতি করেন সাতকানিয়া মডেল মসজিদের খতিব মো. মিজানুর রহমান। জানাজা শেষে বেগম খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়। এ সময় অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। আবেগঘন পরিবেশে অনেক মুসল্লি হাত তুলে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন।
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর গত মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।