চুয়াডাঙ্গায় ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশক কারিগরদের
বিপুল আশরাফ
চুয়াডাঙ্গা, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): চুয়াডাঙ্গায় শীতের তীব্রতা বাড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে লেপ-তোশক তৈরির কারিগরদের। বছরের অন্য সময়ে কাজ বেশি না থাকায় অনেকটাই অলস সময় পার করেন তারা। কিন্তু শীত মৌসুমে এ দৃশ্য পাল্টে যায়। ব্যস্ততা বেড়ে যায় তাদের। আয়ও হয় ভালো।
চুয়াডাঙ্গাতে এবার আগেভাগেই শীত পড়তে শুরু করেছে। কার্তিক মাসের শেষের দিক থেকে শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। তাই বিগত বছরগুলোতে অগ্রহায়ণ মাসে লেপ তোশকের কাজ শুরু হলেও এবার অনেক আগে থেকেই এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, শীত জেঁকে বসার সঙ্গে সঙ্গে জেলার ৪ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে লেপ-তোশক তৈরির ধুম পড়েছে। ক্রেতারা ভিড় জমাতে শুরু করছেন দোকানগুলোতে। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোশক তৈরিতে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।
সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা শহরের বড় বাজার, কোট মোড়, জীবননগর উপজেলা শহরের ছোট বড় লেপ-তোশক তৈরির বিভিন্ন দোকানে গিয়ে দেখা যায়, মালিক-শ্রমিক, ধুনাইকাররা এখন তুলাধুনা ও সেলাইয়ের কাজে বেশ। এর আগে কেনা হয়েছে লেপের কাপড়। দোকানগুলোতে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়। এর মধ্যে কেউ কেউ লেপ-তোশকের অর্ডার দিয়ে যাচ্ছেন, কেউ আবার তৈরি করা লেপ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ধনক কারিগর আজিবর রহমান বলেন, দিন যতই গড়াচ্ছে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ছে। শীতের তীব্রতা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কায় উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ নতুন নতুন লেপ তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছে। বছরের অন্যান্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০টি লেপ তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
জীবননগর পৌর শহরের লেপ-তোশক ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রচুর লেপ-তোশক তৈরির অর্ডার পাচ্ছি। কাজ সামাল দিতে অতিরিক্ত কারিগর রেখে দিয়েছি। চেষ্টা করছি সঠিক সময়ে গ্রাহকদের কাছে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারবো। অর্ডার নেয়ার পাশাপাশি অগ্রিম কিছু লেপ, বালিশ, তোষক বানিয়ে রেখেছি। ক্রেতাদের কাছে এসব রেডিমেট হিসেবে বিক্রি করি।
তিনি জানান, মজুরি হিসেবে বালিশ প্রতি পিস ৫০ টাকা, লেপ ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, তোশক ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে।
কারিগর মিজানুর রহমান বলেন, কাজের চাপ বাড়ায় কারিগরদেরও চাহিদা বেড়েছে। এখন প্রতিদিন এক হাজার টাকা মজুরি পাচ্ছি। শীতের তীব্রতা বাড়লে কাজের চাপ আরও বাড়বে, তখন মজুরিও বাড়বে।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বড় বাজারের লেপ-তোশক ব্যবসায়ী ও মৌসুমি বস্ত্রালায়ের স্বত্বাধিকারী হাফিজুর রহমান বলেন, শীতের কাপড়ের বেচাকেনা কিছুটা বেড়েছে। বর্তমানে লেপ তোশকের বিকল্প হিসেবে কম্বল ও ম্যাট্রেস বিক্রি হচ্ছে। এরপরেও অনেকে তুলার লেপ ব্যবহার করে। বর্তমানে বড় সাইজের তুলার লেপের দাম ২০০০ থেকে ২১০০ টাকা, আর তোশকের দাম পড়ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা।