শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ জুন, ২০২৫ (বাসস) : এক হিন্দু বৃদ্ধের মুসলমানদের হাতে অপমানিত হওয়ার ভিডিওটি ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এই তথ্য জানিয়েছে।
রোববার রাতে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে, বাংলাদেশের উগ্র ইসলামপন্থীরা এক হিন্দু বৃদ্ধকে জুতার মালা পরিয়ে প্রকাশ্যে অপমান করেছে বলে মিথ্যা দাবি করা হয়।’
ভিডিওর সঙ্গে ছড়ানো ক্যাপশনে বলা হয়, ওই ব্যক্তি একজন হিন্দু স্কুলশিক্ষক, যিনি ৪০ বছর ধরে শিক্ষকতা করেছেন। দাবি করা হয়, ইসলামপন্থীরা তাকে লাঞ্ছিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অনেক এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ব্যাপকভাবে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে ঘটনাটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ধর্মীয় নিপীড়নের উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, তবে তদন্তে উঠে এসেছে, এই দাবি একেবারেই ভুল ও ভিত্তিহীন।
প্রেস উইং জানায়, রিভার্স ইমেজ সার্চ ও কীওয়ার্ড যাচাইয়ের মাধ্যমে দেশীয় মূলধারার সংবাদমাধ্যম যেমন- কালের কণ্ঠ, ঢাকা টাইমস ও বিডিনিউজ২৪-এর প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করা হয়। এসব প্রতিবেদনে ঘটনার প্রকৃত প্রেক্ষাপট স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভিডিওতে যাকে দেখা যাচ্ছে, তিনি কোনো হিন্দু শিক্ষক নন। তার নাম আহমদ আলী। তিনি একজন মুসলিম এবং রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার টেকাটী গ্রামের কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।
কালের কণ্ঠের ১৫ জুনের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগে আহমদ আলীকে মারধর করা হয় এবং জুতার মালা পরিয়ে বাজারে হাঁটানো হয়।
ঢাকা টাইমস জানায়, বেলুড়ি বাজারের এক চায়ের দোকানে ওই মন্তব্য করার পর উত্তেজিত লোকজন তার বিরুদ্ধে এমন প্রতিক্রিয়া দেখায়।
বিডিনিউজ-২৪ ডটকমের খবরে বলা হয়, অবসরের আগে আহমদ আলী নবাবপুর ইউনিয়ন সাব-হেলথ কমপ্লেক্সে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এই নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী, তিনি হিন্দু নন, শিক্ষকও নন। হামলার ঘটনাটিও কোনো নির্দিষ্ট ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। এটি স্থানীয়ভাবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগকে ঘিরে গড়ে ওঠা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভিডিওটি সত্য হলেও এর সঙ্গে তৈরি করা কাহিনী পুরোপুরি ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর। এটি কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘুর ওপর নিপীড়নের ঘটনা নয়, বরং ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে একটি স্থানীয় উত্তেজনা, যেটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার রূপ দেওয়া হয়েছে।’