শিরোনাম
ঢাকা, ১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যা, অবাস্তব ও ভুয়া ভিডিও প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা সনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
বাংলাদেশে চলমান গুজব ও ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ ও জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্বে নিয়োজিত ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ফ্যাক্টওয়াচ হল একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সত্তা, যা লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত ও সেন্টার ফর ক্রিটিকাল অ্যান্ড কোয়ালিটিভেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত।
বরিশালে পলিথিনে পেঁচানো নারীর ছবি নিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, পলিথিনে পেঁচানো এক নারীর ছবি সম্প্রতি ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ওই নারী হিন্দু। কোথাও কোথাও দাবি করা হচ্ছে, তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই নারী হিন্দু নন এবং তাকে ধর্ষণ করে হত্যা করার দাবিটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা।
দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী এই নারীর নাম মারিয়া বেগম। তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রীর স্বজনরা তাকে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন মারিয়া বেগম।
ফেসবুক প্রচারিত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চে ওয়েবসাইটে এটি নিয়ে দেশের অন্যতম একটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
রোববার (২৯ জুন) প্রকাশিত প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, বরিশাল সদরের তালুকদারের হাট এলাকায় হাত-পা বাঁধা ও পলিথিনে পেঁচানো অবস্থায় এই নারীকে উদ্ধার করা হয়। রোববার ভোরে বরিশাল-ভোলা সড়কের পাশ থেকে স্থানীয়রা মারিয়াকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ তাকে শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করে।
ওই নারীর নাম মারিয়া বেগম (২৩)। তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রীর স্বজনরা তাকে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেন মারিয়া।
প্রতিবেদনটিতে বন্দর থানার এসআই সিরাজুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, মারিয়ার স্বামীর নাম মশিউর রহমান। তার শ্বশুর বাড়ি ভোলায়। বরিশাল নগরীর দপদপিয়া গ্যাসটারবাইন এলাকায় বাবার বাড়িতে থাকেন মারিয়া।
প্রতিবেদনটিতে মারিয়ার বক্তব্যও রয়েছে। যেখানে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভোলার ব্যবসায়ী মশিউর রহমানের সঙ্গে এক বছর আগে তার বিয়ে হয়। স্বামীর কাছে ভোলা যেতে শনিবার বিকেলে তিনি বাসা থেকে বের হন। কিন্তু ঘাটে গিয়ে তিনি আর লঞ্চ ধরতে পারেননি। সড়ক পথে লাহারহাট স্টেশনে গিয়েও লঞ্চ ধরতে ব্যর্থ হন।
তিনি আরো জানান, এর পর বাসায় ফিরতে সন্ধ্যার পর ভ্যানে বরিশাল নগরীর উদ্দেশে রওনা হন। চরকাউয়ার জিরো পয়েন্টে পৌঁছলে স্বামীর প্রাক্তন স্ত্রীর ভাইয়েরা মারিয়াকে অপহরণ করে। তারা তাকে একটি জঙ্গলে নিয়ে নির্যাতন করে হাতা-পা বেঁধে পলিথিনে পেঁচিয়ে ফেলে রেখে যান।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে চিকিৎসকের বক্তব্যও পাওয়া যায়। তার বক্তব্য অনুযায়ী, পলিথিনে পেঁচানো এই নারী অর্থাৎ মারিয়া বেগমের সঙ্গে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
একই ঘটনা নিয়ে সম্প্রচার মাধ্যম এখন টিভিতে একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
এসব তথ্যের ভিত্তিতে ফ্যাক্টওয়াচ দাবিটিকে মিথ্যা হিসেবে শনাক্ত করেছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া ভিডিও, খবর ও গুজব ছড়ানোর ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।