বাসস
  ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৭

বীরগঞ্জে চিকিৎসা শেষে আকাশে ডানা মেলল ৮ শকুন

দিনাজপুর, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস): জেলার বীরগঞ্জ  উপজেলার সিংড়া ফরেস্ট  জাতীয় উদ্যানে  ৪ মাসের চিকিৎসা ও পরিচর্যা শেষে প্রকৃতির মাঝে ৮ টি শকুন উন্মুক্ত করা হয়েছে ।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া জাতীয় উদ্যানে দেশের একমাত্র শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র থেকে এসব শকুনদের চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলে  ছেড়ে দেওয়া হয়। শকুন ও মুক্ত করার  সময় সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন দর্শনার্থী ও আশেপাশের এলাকার মানুষ।
দিনাজপুর বীরগঞ্জ বন বিভাগের রেঞ্জার জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার পবিত্র রমজান মাসের ইফতার শেষে রাত সাড়ে ৯ টায়  দিনাজপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব শকুন অবমুক্ত করেন। এ সময়  সেখানে উপস্থিত ছিলেন আই ইউ সি এন দুজন প্রতিনিধি। ৪ মাস আগে উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে অসুস্থ ও মৃতপ্রায় শকুন গুলোকে উদ্ধার করে  নিয়ে আসা হয় বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া জাতীয় উদ্যানে। মহা বিপন্ন শকুন রক্ষায় দিনাজপুর বীরগঞ্জে গড়ে তোলা হয়েছে এ শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উদ্ধার হওয়া শকুনকে নিয়ে আসা হয় এখানে। নিবিড় পরিচর্যা ও চিকিৎসার পর শুকুনগুলো সুস্থ ও সবল হলে অবমুক্ত করা হয় প্রকৃতির মাঝে। শকুনের পাশাপাশি অন্যান্য বন্য প্রাণী রক্ষায় কেন্দ্রটির পরিসরে বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে , এ জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ।
মহাবিপন্ন বন্যপ্রাণী শকুন রক্ষায় ২০১৪ সালে আইইউসিএন এর যৌথ উদ্যোগে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সিংড়া জাতীয় উদ্যানে গড়ে তোলা হয় এ পরিচর্যা কেন্দ্র। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শকুন আটক বা উদ্ধারের খবর পেলেই সেখানে ছুটে যান কেন্দ্রের কর্মকর্তারা। এরপর সেই শকুনকে পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে এসে চলে সেবা ও চিকিৎসা। সাধারণত ৪ থেকে ৫ মাস চিকিৎসা শেষে প্রকৃতি মাঝে  অবমুক্ত করা হয় শকুনগুলো।
কেন্দ্রটির কেয়ারটেকার মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রটি চালু হবার পর থেকেই শকুনের পরিচর্যা করছি। একদিন পর পর খাবার দেওয়া হয়। শকুনগুলো ছাড়ার সময় অনেক মায়া লাগে।’ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা গয়া প্রসাদ পাল বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক হওয়া শকুনগুলো উদ্ধার করি। এরপর পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে আসি। নিবিড় পরিচর্যা  ও সেবা দিয়ে  সুস্থ করে তুলি।’
সংশ্লিষ্টদের আশা, কেন্দ্রটির অবকাঠামো বৃদ্ধি করা হলে বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী রক্ষায় গুর¤œত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে কেন্দ্রটি। দিনাজপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশির আল মামুন বলেন, ‘দেশের একমাত্র এ শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে এ বছর ১০টি হিমালিয়ান জাতের শকুন উদ্ধার করে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। এগুলোকে আগামী মে মাসের শুরুতে অবমুক্ত করা হবে। এ কেন্দ্রটি শকুন রক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখছে। চলতি বছর সম্ভাব্য  আগামী জুলাই মাসে  এখানে বন্যপ্রাণী রক্ষা কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
কেন্দ্রটির পরিধি আরো বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। দিনাজপুর ১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব  মো. জাকারিয়া বলেন, ‘এ পরিচর্যা কেন্দ্রটি আরো বড় করা হবে। বিলুপ্তপ্রায় শকুনকে আবারো প্রকৃতির মাঝে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া পরিকল্পনা রয়েছে ।’ কেন্দ্রটি যাত্রা শুরু পর থেকে এ পর্যন্ত ১৫৬ টি শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা করে অবমুক্ত করা হয়েছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়