শিরোনাম

নেত্রকোণা, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নেত্রকোনা মুক্ত দিবস আজ।১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী থেকে নেত্রকোণা মুক্ত করেছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
এদিন রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনীর তিন দিক থেকে আক্রমণের মুখে ময়মনসিংহের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল পাক বাহিনী।
জানা গেছে, ৮ ডিসেম্বর রাত থেকেই শহরের বর্তমান বিএডিসি কৃষিফার্ম এলাকায় এ্যাম্বুস পেতে অপেক্ষায় ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। টাইগার খ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সিদ্দিক আহমদের নেতৃত্বে ভোরের আলো যখন ফুটতে থাকে তখনি শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। মরণপণ লড়াই করে নেত্রকোণা শহরকে মুক্ত করতে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন আবু খাঁ, আব্দুস সাত্তার, আব্দুর রশিদ।
৮ ডিসেম্বর রাত থেকে ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধারা অবিরাম যুদ্ধ চালিয়ে শহরের রাজুরবাজার, চকপাড়া, সাতপাই, কাটলী, নাগড়া, কৃষিফার্ম এলাকা থেকে পাকদের ময়মনসিংহের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী জানান, ১৬ ডিসেম্বর যেমন আনন্দের, ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোণাবাসীর কাছে তেমনি আনন্দের। এদিন শহর শত্রু মুক্ত হতেই চারদিক থেকে মানুষ হৈ হুল্লোড় করে বাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। আমাদের অভিনন্দন জানায়। এ দিনটি আসলে আমরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি।
দিবসটি পালন লক্ষ্যে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স থেকে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালি বের হয়ে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা কালেক্টরের ভবন প্রাঙ্গণে প্রজন্ম ৭১ ভাষ্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
বর্ণাঢ্য এ আনন্দ র্যালিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সভাপতি চিকিৎসক অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল হক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম সরদার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসমা বিনতে রফিকসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
র্যালি শেষে জেলা শহরের মোক্তারপাড়ায় পাবলিক হলে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।