বাসস
  ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:১২

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক বাঁধা দূর করতে ভুটান ও বাংলাদেশ উভয় পক্ষ সম্মত

ঢাকা, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস): বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে ৯ম বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভা গত ২৪ ও ২৫ এপ্রিল ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় উভয় পক্ষ বাণিজ্য বৃদ্ধিতে  শুল্ক ও অশুল্ক বাধা প্রশমন এবং রপ্তানি সুবিধা বৃদ্ধি, বিনিয়োগ, ট্রানজিট এবং যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতা,পর্যটন, কাস্টমস ও ল্যান্ড পোর্টের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমুহ দূর করতে পারষ্পরিক  সহযোগিতার বিষয়ে সম্মত হয়।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ভুটান প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সেদেশের শিল্প, বানিজ্য ও কর্মসংস্থান সচিব তাশি ওয়াংমো। উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণলায়ের প্রতিনিধিবৃন্দের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধিদলে দু’দেশের রাষ্ট্রদূতগণ অংশগ্রহণ করেন।
সভার সূচনা বক্তব্যে উভয় দেশের বাণিজ্য সচিব দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান চমৎকার সম্পর্কের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বৈঠকে উভয়পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ভুটানকে প্রতিবেশী দেশসমুহের সাথে আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যবসা বাণিজ্য সহজতর করার লক্ষ্যে বিবিআইএন এমভিএ কাঠামোতে পুণরায় যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। জবাবে ভুটান বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনার আশ্বাস দেয়।
বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের ৯ম সভায় বাংলাদেশ-ভুটান বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার জন্য বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয় আলোচনা করা হয়। উভয় বাণিজ্য সচিব অগ্রাধিকার মূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সম্পাদনের ফলে দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং উভয় পক্ষ বিদ্যমান বাংলাদেশ ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় অতিরিক্ত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে সম্মত হন। বাংলাদেশ এবং ভুটান ট্রাফিক ইন ট্রানজিট চুক্তি এবং এর প্রটোকল বাস্তবায়নের জন্য পরীক্ষামুলক রপ্তানি ও আমদানি (ট্রায়াল রান) পরিচালনার জন্য সম্মত হন। বাংলাদেশ ও ভুটানের কাস্টমস সম্পর্কিত তথ্য ও প্রতিবেদন আদান প্রদান  এবং উভয় দেশের শুল্ক কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সহযোগিতা বৃদ্ধি জন্যে  উভয় পক্ষই স্বল্পতম সময়ের মধ্যে কাস্টমস মিউচুয়াল অ্যাসিসটেন্স এগ্রিমেন্ট (সিএমএএ) স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছেন।
ভুটান প্রতিনিধি দলের প্রধান তাশি ওয়াংমো উল্লেখ করেন, তার দেশ বরাবরই নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের শিল্প-বানিজ্যের সমৃদ্ধি  এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি অনুসরণ করে। তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ বন্ধু দেশ হিসেবে ভুটান সবসময় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক শান্তি ও অগ্রগতির প্রয়োজনে বাংলাদেশকে সমর্থন ও সহযোগিতা করে আসছে।
বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের সভার পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ভুটানের শিল্প বানিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের  মন্ত্রী নামগেল দর্জি এবং পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্যে সংক্রান্ত  মন্ত্রী ডি এন ধুঙ্গেলের সাথে সাক্ষাত করে। সাক্ষাতকালে  উভয় মন্ত্রী গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের ভুয়শী প্রশংসা করেন। ভুটানের মন্ত্রীগণ দুই দেশের পারস্পরিক ব্যবসা-বাণিজ্য সমৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ, আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি, ট্যুরিজম এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণে সম্মত হন। ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান ভুটানের বিবিআইএন-এমভিতে পূর্ণ সদস্য হিসেবে পুনঃঅন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিবেচনাধীন এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এসব বৈঠক সমূহের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ভুটানের ফুয়েন্টশোলিং-এ বিভিন্ন আমদানী-রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য সংস্থার সদস্যগনের সাথে সভা করেন। সভায় বাংলাদেশ হতে পণ্য আমদানির-রপ্তানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও উত্তোরণ এবং পারস্পারিক শুল্কায়নের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত জটিলতা নিরসণ এবং শুল্কায়নের সহজীকরণসহ বাণিজ্য সম্প্রসারণে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়ে আলোচনা হয়।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়