শিরোনাম

ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): গণসংহতি আন্দোলন-জিএসএর প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথে এগোবে। এই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন অপরিহার্য জাতীয় লক্ষ্য। যারা এই তিন লক্ষ্য বানচালের চেষ্টা করবে, জনগণ জুলাইয়ের আদর্শে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিহত করবে।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই বিপ্লবের অগ্রনায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, ময়মনসিংহে শ্রমিক দীপুচন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা ও লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে শিশু আয়েশা আক্তারকে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে গণসংহতি আন্দোলন-জিএসএর উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ওসমান হাদিকে যারা হত্যা করেছে তাদের অবশ্যই গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচন বানচালের যে তৎপরতা চলছে, সরকারকে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ব্যক্তি বিশেষের ওপর করা হামলার ঘটনাগুলোও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সরকারকে অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যেতে পারছে, অথচ রাষ্ট্রযন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো হত্যাকারীদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য দিতে পারছে না।
সমাবেশে জিএসএর নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির সংগঠক মোতালেব শিকদারকে গুলি করার ঘটনায় জড়িতদের আজকের মধ্যেই গ্রেফতার করতে হবে। জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থন পেয়েছিল। কাজেই সরকারের ব্যর্থতার দায় জনগণ নেবে না, এর জবাব সরকারকেই দিতে হবে।
জিএসএর রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, ওসমান হাদি, দীপুচন্দ্র দাস ও শিশু আয়েশা আক্তার হত্যার মাধ্যমে একটি গোষ্ঠী দেশের সার্বভৌমত্বকে গ্রাস করার চেষ্টা করছে। পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র চলছে এবং তারাই নির্বাচন বারবার পিছিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে।
সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথেই এগোবে। এখানে মতপার্থক্য থাকবে, বিরোধ থাকবে, কিন্তু কোনো জবরদস্তি চলবে না।
তিনি লক্ষ্মীপুর ও ময়মনসিংহের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডকে দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা বলে উল্লেখ করে এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জিএসএর রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বাচ্চু ভুইয়া, দীপক কুমার রায়, আমজাদ হোসেন, অঞ্জন দাস, লুৎফুন্নাহার সুমনা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ান, কেন্দ্রীয় পরামর্শক পরিষদের সদস্য গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) মো. খালেদ হোসাইন এবং বাংলাদেশ যুব ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক জাহিদ সুজন।