শিরোনাম

ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ভারতভিত্তিক একটি ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওকে রাজধানীর বনানীতে ধর্ষণের ঘটনা বলে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে গুজব ও অপপ্রচার শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভিডিওতে থাকা দৃশ্য বাস্তব নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে এসব ছবি তৈরি করা হয়েছে।
ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হয়, ঢাকার বনানীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেত্রীকে ধর্ষণ করে তিন সন্ত্রাসী রাস্তার পাশের ড্রেনে ফেলে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তার পাশে এক তরুণী পড়ে আছে। পাশে রয়েছে তার জুতা আর পানির বোতল। সেখানে তরুণীকে দেখে অসুস্থ বা আহত মনেহচ্ছে।
ফ্যাক্টওয়াচ রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভিডিওটির উৎস খুঁজে পায়। দেখা যায়, ভিডিওটি ভারতের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে আপলোড করা হয়েছে। চ্যানেলটি মূলত ছোট ছোট কমেডি ভিডিও বানায়। আলোচিত তরুণীকে নিয়ে আরও বহু ভিডিও আছে সেখানে।
ইউটিউবে পাওয়া স্পষ্ট সংস্করণটির ক্যাপশনে কিছু হ্যাশট্যাগ ছিল, যেগুলো দেখে বোঝা যায়, এটি কমেডি ধারার কনটেন্ট। সেখানে ‘ইঙউঙ’ নামে একটি শব্দ পাওয়া যায়, যা ভারতের আসামের একটি আদিবাসী গোষ্ঠীর নাম। ভিডিওর অডিওতেও নানা ধরনের ফানি শব্দ রয়েছে।
এই ইউটিউব লিংকটির ইউজার নেমে ক্লিক করে ঙসধ গধলবস নামের একটি ইউটিউব অ্যাকাউন্ট পাওয়া যায়। সেখানে একই তরুণীর বেশ কিছু কমেডি ভিডিও পাওয়া যায়। এই ভিডিওগুলো আপলোডের তারিখ অনুসন্ধান করে দেখা যায়, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা এই ভিডিও আপলোডের পরের দিনও কমেডি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে।
ইউটিউব অ্যাকাউন্টের হোম সেকশন দেখায়, চ্যানেলটি ভারত থেকে পরিচালিত হয় এবং এ বছর ২১ মে এটি খোলা হয়েছে।
এ ছাড়া প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড দিয়ে দেশের কোনো মূলধারার গণমাধ্যমে বনানীতে এ ধরনের ঘটনার সাম্প্রতিক কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সব মিলিয়ে ফ্যাক্টওয়াচ বলছে, ভিডিওটি ঢাকার বনানীতে ধর্ষণের শিকার কোনো তরুণীকে নিয়ে নয়; বরং এটি একটি কমেডি ভিডিও। তাই ফেসবুকে ছড়ানো ক্যাপশন ও দাবি ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।
দেশে চলমান গুজব ও ভুয়া খবর প্রতিরোধ এবং জনগণকে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে কাজ করছে ফ্যাক্টওয়াচ। এটি লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিকাল অ্যান্ড কোয়ালিটিভেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) পরিচালিত একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া ভিডিও, গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর ঘটনা বেড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচ এসব নজরে রেখে সত্য যাচাই ও গুজব প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে।