শিরোনাম

ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : এক বৃদ্ধাকে যুবদলের সভাপতির মারধরের দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি ভারতের ঘটনা হিসেবে শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, এক বৃদ্ধাকে যুবদলের সভাপতির মারধরের দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটি ভারতের। একজন নারীকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন একজন পুরুষ— এ ধরনের একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, রাজশাহীতে ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি একজন মায়ের মতো বয়স্ক মানুষকে মেরেছে। ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের।
ভিডিওটির বিভিন্ন কী-ফ্রেমের সাহায্যে রিভার্স ইমেজ সার্চে ফ্যাক্টলি’র একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শিরোনাম— উত্তর প্রদেশের দেওরিয়া জেলায় এক ব্যক্তি এক বৃদ্ধা নারীর ওপর হামলা চালাচ্ছে, এমন একটি ভিডিওকে ভুল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ দিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে। ওই প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, এই ভাইরাল ভিডিওতে যে ব্যক্তি বৃদ্ধা নারীর ওপর হামলা করেছেন, তিনি মুসলিম নন। এছাড়া, ওই বৃদ্ধা নারীর মৃত্যু হয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, উত্তর প্রদেশের দেওরিয়া জেলার গৌরী বাজার থানার আওতাধীন বিষ্ণুপুরা প্রথম এলাকায়। সেখানকার পুলিশ জানায়, ঘটনাটি জমি সংক্রান্ত বিরোধ থেকে ঘটেছে এবং বৃদ্ধা নারীর ওপর হামলাকারীর নাম আশীষ পাণ্ডে।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভারতে এটি ছড়িয়েছিল ‘অ্যা মুসলিম ম্যান অ্যাটাকড অ্যান্ড কিলড অ্যান ইলডারলি উইমেন ইন দেওরিয়া ডিস্ট্রিক্ট অব ইত্তর প্রদেশ’ দাবিতে। এই প্রতিবেদনের সঙ্গে যেসব ছবি ও ভিডিও যুক্ত রয়েছে সেগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশে ছড়ানো ভিডিওর মিল রয়েছে।
পরবর্তীতে প্রাসঙ্গিক কী-ওয়ার্ড সার্চে আজতক বাংলার একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেওরিয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধে এক বৃদ্ধা দলিত নারী ও তার ছেলেকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে বাংলাদেশে সম্প্রতি এ ধরনের কোনো খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ফলে, ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় এবং সেই কারণে এই ঘটনার সঙ্গে রাজশাহীর যুবদলের যুক্ত থাকার বিষয়টি অবান্তর। কাজেই, এমন দাবিযুক্ত ফেসবুক পোস্টগুলোকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম, ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্ট এবং দেশের কিছু ফেসবুক পেজ থেকে বাংলাদেশকে ঘিরে নানা ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে। এসব অপতথ্য, বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, চব্বিশের আন্দোলনে অংশ নেওয়া দল ও সংগঠনকে লক্ষ্য করে ছড়ানো হচ্ছে।
দেশে চলমান গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে ফ্যাক্টওয়াচ কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) পরিচালিত স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া ভিডিও, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও গুজব ছড়ানোর ঘটনা বেড়েছে। ফ্যাক্টওয়াচ সেসব বিষয় নিয়মিতভাবে যাচাই করে সত্য তুলে ধরছে এবং গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে।