বাসস
  ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৮

হাইব্রিড সবজি বীজ উৎপাদনে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সার্কের আহ্বান

ফাইল ছবি

ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): সার্ক কৃষি কেন্দ্র (এসএসি) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘সার্ক সদস্য দেশসমূহে সবজি ফসলের হাইব্রিড বীজ উৎপাদনে সাম্প্রতিক অগ্রগতি’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ কর্মশালা আজ সোমবার উদ্বোধন করা হয়েছে। 

দক্ষিণ এশিয়ার সবজি বীজ খাতে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করতে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর বিজ্ঞানী, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে এসএসির পরিচালক ড. মো. হারুনূর রশীদ বলেন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইব্রিড সবজি বীজ প্রযুক্তির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিক উৎপাদনশীলতা বাড়াতে গবেষণার সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানসম্মত বীজ উৎপাদন এবং জলবায়ু-সহনশীল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, সহযোগিতা বৃদ্ধি, জ্ঞান বিনিময় ও সক্ষমতা উন্নয়নই উচ্চমানের, জলবায়ু সহনশীল হাইব্রিড বীজ উৎপাদনকে আরও শক্তিশালী করবে।

প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ও কারিগরি সেশনসমূহ উপস্থাপন করে সার্ক কৃষি কেন্দ্রের সিনিয়র কর্মসূচি বিশেষজ্ঞ (ফসল) ড. সিকান্দার খান তানভীর জানান, বিভিন্ন সবজি ফসলের হাইব্রিডায়ন পদ্ধতি, বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণসহ গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি বিষয়গুলো এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা সদস্য দেশগুলোর বীজ উৎপাদন দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- ভারতের কৃষি গবেষণা পরিষদ (আইসিএআর)-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. সুধাকর পাণ্ডে। তিনি বলেন, হাইব্রিড সবজি বীজ উৎপাদনের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ফলন বৃদ্ধি, গুণগত মান উন্নয়ন এবং রোগুপোকা প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। দক্ষিণ এশিয়ার সবজি উৎপাদন বৃদ্ধিতে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদারের ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (এআরডি ও এসডিএফ) তানভীর আহমেদ তরফদার বলেন, পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে সদস্য দেশগুলো যখন সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে, তখন এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সময়োপযোগী। তিনি জানান, অভিজ্ঞতা বিনিময়, দেশভিত্তিক উপস্থাপনা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা হাইব্রিড বীজ উন্নয়ন ও বাণিজ্যিকীকরণকে আরো এগিয়ে নেবে।

প্রধান অতিথি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) ড. মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, হাইব্রিড সবজি বীজ ফলন, গুণগত মান এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধির কার্যকর মাধ্যম। তবে মানসম্মত বীজের সীমিত প্রাপ্যতা, জলবায়ুগত চাপ এবং প্রশিক্ষিত জনবলের ঘাটতি এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে।

সেশনে অংশগ্রহণকারীরা হাইব্রিড সবজি বীজে আমদানি-নির্ভরতা, গবেষণা-প্রসার ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং বীজ সার্টিফিকেশন ও কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষজ্ঞরা যৌথ গবেষণা, জার্মপ্লাজম বিনিময়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব এবং আঞ্চলিক বীজ মানদণ্ড প্রণয়নের ওপর জোর দেন, যাতে দক্ষিণ এশিয়ার বীজ নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হয়।