বাসস
  ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০:৩৩

দশ বছর পূর্তিতে ১৪ নভেম্বর সমাবেশ ও মাথাল র‌্যালি করবে গণসংহতি আন্দোলন

বুধবার দুপুরে রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। ছবি: গণসংহতি আন্দোলন

ঢাকা, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): রাজনৈতিক দল হিসেবে এক দশক পূর্তি উপলক্ষে গণসংহতি আন্দোলন (জিএসএ) আগামী ১৪ নভেম্বর শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ ও মাথাল র‌্যালির আয়োজন করেছে। শুক্রবার বিকাল ৩টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর হাতিরপুলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল।

এ সময় তিনি দলের নবনির্বাচিত ৫৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচিতি এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় নির্বাচন অপরিহার্য। রাষ্ট্রীয় সংস্কার বাস্তবায়নে নির্বাচন করতেই হবে।

তিনি আরও জানান, তাদের দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে। তবে অন্য দলগুলো জোটগত প্রতীক ব্যবহারের বিষয়টি উন্মুক্ত রাখা উচিত।

সংশোধিত আরপিওতে জামানত বৃদ্ধির সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি স্পষ্ট করে যে নির্বাচন পদ্ধতি ক্রমেই অর্থনির্ভর হচ্ছে, ফলে আর্থিকভাবে কম সক্ষম প্রার্থীদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান পুরো বাংলাদেশকে আবার একটা পুনর্গঠনের দাবি নিয়ে সামনে এসেছে। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও নতুন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক কাঠামো গড়ে তুলতে জাতীয় ঐকমত্য অপরিহার্য। সেই পুনর্গঠন কালটাতেও ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য হচ্ছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য, যেটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করব। এসবের মধ্য দিয়ে একটা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক নতুন বন্দোবস্ত আমরা কায়েম করতে চাই।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, এই ঐতিহাসিক কালে নতুন বন্দোবস্ত কায়েম একক কোনো দলের পক্ষে সম্ভব না। সে কারণে ন্যূনতম জাতীয় ঐকমত্য দরকার। ফলে জিএসএ সহ গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপি এবং উনচল্লিশটি রাজনৈতিক দল যে লড়াইটা করে এসেছি, তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন, গণভোট ও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে আগামী সংসদ গঠনের পথরেখা আমাদেরকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই বলে আসছি, শহীদের রক্তের ঋণ যদি আমরা বহন করি, তাহলে তাদের আকাঙ্ক্ষা আমাদের পূরণ করতে হবে। সেটা করতে হলে বিচার সংস্কার এবং নির্বাচন, এই তিনটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমাদের শেষ করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদেরকে গণতান্ত্রিক উত্তরণটা ঘটাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দলীয় ঐক্য ছাড়া নতুন রাষ্ট্রবিন্যাস সম্ভব নয়। তাই জিএসএসহ গণতন্ত্র মঞ্চ, বিএনপি ও আরও ৪৯টি রাজনৈতিক দলের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচন, গণভোট এবং সংবিধান সংস্কার পরিষদের পথরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, শহীদদের রক্তের মূল্যায়নে বিচার সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এর মাধ্যমেই গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের রাজনৈতিক পরিষদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা ও পরামর্শক পরিষদের সদস্যসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।