শিরোনাম

ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : মহান বিজয় দিবসে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিজয় বইমেলা রূপ নিয়েছে উৎসবে। লাল-সবুজের আবেশে সাজানো মেলা প্রাঙ্গণে দিনভর বইপ্রেমীদের পদচারণা, আলাপচারিতা আর বই কেনাবেচার আনন্দে প্রাণচঞ্চল পরিবেশ বজায় ছিল।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের তুলনায় মেলায় বিজয় দিবসের দিনে মানুষের আনাগোনা ছিল বেশি। বইপ্রেমীরা লাল-সবুজসহ নানা রঙ বেরঙের পোশাকে বইমেলায় এসেছেন। স্টলে স্টলে ঘুরে বই দেখছেন, পছন্দ হলে কিনছেনও কেউ কেউ। তরুণ পাঠকদের পাশাপাশি সপরিবারে আগত দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মেলা পরিণত হয় সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলা।
হাজারও মানুষের ভীড়ে কথা হয় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মীর মঞ্জুর মোরশেদের সঙ্গে। তিনি জানান, বিজয় দিবসের দিনে বইমেলায় এসে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে। মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাসভিত্তিক বইগুলো এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে, যা নিজেদের শিকড়কে নতুন করে চিনতে সাহায্য করে।
তিনি আরও বলেন, বইয়ের সঙ্গে বিজয়ের চেতনার এই সংযোগ সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। আশা করি, এ ধরনের বিজয় বইমেলা প্রতি বছরই আয়োজন করা হবে।
এদিকে বিজয় দিবসে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোও খুশি। তারা জানান, আজকের মত করে যদি প্রতিদিনই এত পাঠকদের দেখা মিলত, তবে বিক্রি আরও ভাল হত।
গ্রিপার মার্ক পাবলিকেশনের বিক্রয় প্রতিনিধি তাকিম শেখ জানান, অন্য দিনের তুলনায় আজকে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের ভীড় অনেক বেশি। সেজন্য বিক্রিও হচ্ছে ভালো।
এদিন বইমেলার ‘বিজয় মঞ্চে’ আলোচনায় বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইন। তিনি বলেন, সংবেদনশীল মানুষ হতে চাইলে, বই পড়ার বিকল্প নেই। নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করতে হলে পরিবার থেকেই পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ঘরে বড়রা বই পড়লে ও কিনলে ছোটরাও আগ্রহী হয়। বাসায় বই আসা মানে নতুন জ্ঞান ও চিন্তার আগমন। আর বই যত পুরোনোই হোক, সেটির মধ্যকার জ্ঞান কখনও পুরোনো হয় না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে পাঠকের সংখ্যা কমে যাওয়া উদ্বেগজনক। তাই পরিকল্পিতভাবে নতুন প্রজন্মকে পাঠক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগ জরুরি।
উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া এই বইমেলা চলবে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের বিজয় বইমেলায় মোট ১৭০টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে দেশের শীর্ষ ১৪০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। প্রতি কর্মদিবসে দুপুর আড়াইটা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিনে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকছে।