শিরোনাম

ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : পুরোনো ব্যবস্থার রাজনীতি ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নতুন ব্যবস্থার রাজনীতিতে আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান এ মন্তব্য করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতের রাজনীতি হবে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, ধর্ষণ, মিথ্যা মামলা, দুর্নীতি, অন্যায় ও অনাচারের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগ আয়োজিত ‘যুব ম্যারাথন’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর বলেন, ‘তারুণ্যের নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত ম্যারাথন চলবেই। যত বাধা ও ভয়ভীতি আসুক, আমরা থেমে যাব না। জাতির স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরও বলেন, আগামীর নির্বাচনে কোন ধরনের কারিগরি ষড়যন্ত্র জনগণ হতে দেবে না। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আনুকূল্য চাই না। কিন্তু কমিশন যদি কারও প্রতি আনুকূল্য দেখায়, তাহলে সেটি মেনে নেওয়া হবে না।
কালো টাকায় কাউকে কেনার চেষ্টা করা হলে মুখে ছাঁই মেরে দেবে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন। দেশপ্রেমে উজ্জীবিত জাতিকে কেউ কালো টাকায় কিনতে পারবে না।
শফিকুর রহমান বলেন, পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের ওপর অবিচার করার কারণে এবং বৈষম্য সৃষ্টি করায় মানুষ ফুঁসে উঠেছিল। যারা ৭০ এর নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিল, তারা জনগণকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বৈষম্যহীন শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারা ক্ষমতায় বসে সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, বরং তারা বহুদলীয় গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল এবং মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। রক্ষী বাহিনী গঠন করে যাকে ইচ্ছে তাকে খুন করেছিল এবং মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠন করা হয়েছিল। বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে পরিবারতন্ত্রের শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, তাদের ১৫ বছরের শাসনামলে এমন কোনো জনপদ নেই যেখানে মানুষ জুলুম থেকে রক্ষা পেয়েছে। যার কারণে জুলাই আন্দোলনে তাদের বিরুদ্ধে দেশবাসী ফুঁসে উঠেছিল। তারা জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এখন আবার পলাতক থেকেই চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের টার্গেট এখন দেশের তরুণ ও বিপ্লবীরা। সেই টার্গেটের অংশ হিসেবে তারা জুলাইয়ের অন্যতম শীর্ষ নেতা ওসমান হাদিকে হত্যা চেষ্টা করেছে। তার কিছু হলে বিপ্লবীরা বসে থাকবে না। আওয়ামী লীগ ভেবেছে ওসমান হাদিকে শেষ করতে পারলে কিংবা কয়েকজন বিপ্লবীকে শেষ করতে পারলে তারা সফল হবে। কিন্তু বিপ্লবীর সংখ্যা তারা কমাতে পারবে না। তরুণরা আওয়ামী লীগের সকল অপশক্তি রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
জামায়াতের আমির উপস্থিত যুব সমাজকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত ম্যারাথন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী সভায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমিরর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘রাজপথে বিজয়ে, চলো এক সাথে বাংলাদেশ গড়ি’- স্লোগানে জামায়াতে ইসলামী সকলকে সঙ্গে নিয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে প্রস্তুত। এই যুব ম্যারাথন অতীতের বস্তা পঁচা রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে নতুন ধারার রাজনীতির বার্তা দেয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক প্রমুখ।
এসময় দলটির কেন্দ্রীয় এবং ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব ম্যারাথন উদ্বোধন করেন। আয়োজকরা জানান, যুব ম্যারাথনে অর্ধ লাখ তরুণ যুবক অংশ নেন। এটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ-সাইন্সল্যাব হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়।