শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে জুলাই মাসজুড়ে উদযাপিত হয়েছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’।
এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল তরুণদের মাঝে ঐতিহাসিক চেতনা জাগ্রত করা, পার্বত্য অঞ্চলের সংস্কৃতি ও
সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং ক্রীড়ার মাধ্যমে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করা।
উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ‘জুলাই পুনর্জাগরণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট। পুরো জুলাই মাসজুড়ে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান এই তিনটি জেলায় তিনটি টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জেলার বিভিন্ন যুব দল এতে অংশগ্রহণ করে, যা স্থানীয় তরুণদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। ফুটবল খেলা কেবল প্রতিযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি পরিণত হয় এক প্রাণবন্ত তারুণ্যের উৎসবে, যেখানে ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সামাজিক সম্প্রীতির মিলন ঘটে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসবে তাঁর মতামত ব্যক্ত করে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল বাঙালির আত্মপরিচয়, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মাইলফলক। অভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মত্যাগ জাতিকে চিরদিন প্রেরণা জোগাবে। উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসে আলোচিত এই ‘জুলাই পুনর্জাগরণ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষ্যে পার্বত্য তিন জেলায় প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
টুর্নামেন্টের ফাইনাল পর্বে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা। তাঁরা নিজ নিজ জেলার টুর্নামেন্ট পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং তরুণদের উৎসাহিত করতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন।
এই উৎসব ও টুর্নামেন্টগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ্যণীয়। রিজিয়ন কমান্ডার সদর রিজিয়ন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারা উৎসবের বিভিন্ন পর্বে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের উপস্থিতি পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের বার্তা বহন করে।
পুরো আয়োজন উপভোগ করেন তিন জেলার প্রায় পঞ্চাশ হাজার নারী-পুরুষ দর্শক, যারা মাঠে উপস্থিত থেকে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন এবং উৎসবের আনন্দে সামিল হন। এই বিপুল সংখ্যক দর্শকের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, পার্বত্য অঞ্চলের জনগণ ক্রীড়া ও সংস্কৃতির প্রতি কতটা আগ্রহী এবং ঐক্যবদ্ধ।
‘জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও তরুণ প্রজন্মের শক্তিকে একত্রিত করে একটি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে। এই আয়োজন পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন, শান্তি ও সম্প্রীতির পথে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে।