বাসস
  ২৩ জুলাই ২০২৫, ১৭:৩৮

উদ্ভূত পরিস্থিতি উত্তরণের একমাত্র পথ দ্রুত নির্বাচন : মির্জা ফখরুল

আজ গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জ বাবে : মির্জা ফখরুল ছবি : বাসস বাবে : মির্জা ফখরুল

ঢাকা, ২৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতি উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে, অতি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা।’

আজ গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছিলেন। আমরাও আলোচনায় অংশ নিয়েছি। আমরা পূর্বের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছি। একই সঙ্গে আমরা বলেছি, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করতে হবে। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের যে কথা বলেছেন, সেটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অতি দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আর যেন কোনো অস্পষ্টতা না থাকে সেই ব্যবস্থাটা নেয়া উচিত।  দলের তরফ থেকে আমরা সেটা উনাকে বলে এসেছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এটুকু বলেছেন যে, তিনি সেই ব্যবস্থাটা নেবেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সবসময় চাই, দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সরকার গঠিত হোক। যদি রাজনৈতিক সরকার না থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য বলেছি।’

ফেব্রুয়ারিকে টার্গেট করে সরকার এগোচ্ছে কিনা প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমি তো দেখছি, আগাচ্ছে।’

গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শক্তি এক ধরনের ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল। জুলাই-আগস্ট কর্মসূচি চালানোর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের আমাদের যে প্রক্রিয়া চলছে সেই জুলাই-আগস্টেই পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শক্তির আবারো উত্থানের একটা নমুনা দেখা গেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই কারণেই সম্ভবত প্রধান উপদেষ্টা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যুক্ত থাকা দলগুলোকে ডেকেছেন মতবিনিময়ের জন্য। আমরা পূর্বের মতোই সরকারকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি।’

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সভাপতি মৃগেন হাগিদের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। ৩০ আগস্ট ময়মনসিংহে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সমাবেশ উপলক্ষ্যে এই প্রস্তুতিমূলক সভা হয়।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য অটুট আছে। মিডিয়ায় মাঝে মাঝে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কথাবার্তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। কখনো পক্ষে, কখনো বিপক্ষে কথা হয়, বকাবকি হয় এগুলো রাজনীতিতে থাকবেই।

তিনি বলেন, রাজনীতির মানেই হচ্ছে প্রতিপক্ষকে কথা দিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা করা, নিজের মতকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা, বিষয়টা নিয়ে আমরা চিন্তিত না কারণ রাজনীতির নিয়মটাই এমন। সুতরাং এই ধারা থাকবে, এখান থেকেই রাজনীতি আগাবে।

গণতন্ত্রের গুরুত্ব তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্র মানেই হলো সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে, প্রত্যেকের কথা শুনতে হবে, শত ফুল ফুটতে দিতে হবে। এটা হলেই সৌরভের সুবাতাস বইবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তাদের প্রস্তাব। এটি নিয়ে আলোচনা চলছে। আমাদের দল এবং অন্যান্য দল নিজেদের মতামত দিয়েছে। এখন দেখা যাক আলোচনা মধ্য দিয়ে কোনটা প্রতিষ্ঠিত হয়।’

উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এটিকে দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখছি, সরকারও তাই বলছে। এটা দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটি বিমান দূর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক তরতাজা প্রাণ গেছে, আমি নিজেও পরশুদিন দেখতে গিয়েছিলাম, দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আমি বিশেষজ্ঞ না হলেও যতটুকু জেনেছি, এটি একটি প্রশিক্ষণ বিমান ছিল এবং দুর্ঘটনার সময় পাইলট একা ছিলেন। এখানে সামথিং ওয়াজ রং হতেই পারে। কিন্তু তিনি বিমানটিকে নিরাপদ স্থানে নামানোর চেষ্টা করেছিলেন যাতে স্কুলের ওপর না পড়ে, তবে পারেননি। এর আগেও এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা গেছে।’