বাসস
  ০২ জুন ২০২৫, ১৯:৫২

কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক জেটি

কক্সবাজারের মহেশখালীতে নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক জেটি। ছবি: বাসস

প্রতিবেদন: ইব্রাহিম খলিল মামুন

কক্সবাজার, ২ জুন ২০২৫ (বাসস): জেলার দ্বীপ উপজেলা মশেখালীতে নির্মাণ করা হচ্ছে পর্যটক বান্ধব আধুনিক জেটি। ইতোমধ্যে নতুন এ জেটির নির্মাণকাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

মহেশখালীর লোকসংখ্যা প্রায় সাড়ে চারলাখ। কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে যাত্রী দিন দিন বাড়লেও নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি। দ্বীপটির সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ৮ কিলোমিটারের ‘কক্সবাজার-মহেশখালী সাগর চ্যানেল’। প্রতিদিন ১৭০টি নৌযানে অন্তত ২০ হাজার মানুষ এ নৌপথ ব্যবহার করেন। 

কিন্তু মহেশখালীর গোরকঘাটায় স্থায়ী জেটি না থাকায় দ্বীপটিতে যাতায়াতের সময় মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষত, বর্ষাকাল ও দুর্যোগপূর্ণ আওহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকলে এ নৌপথ দিয়ে পারাপারের সময় মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়ে। এছাড়া অসুস্থ রোগী নিয়ে ও জরুরি পরিস্থিতিতে এই জলপথে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

এমন পরিস্থিতিতে নির্মাণাধীন নতুন জেটি নিয়ে আশার আলো দেখছেন মহেশখালীর বাসিন্দারা। পর্যটকবান্ধব এই জেটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে মহেশখালী দ্বীপে মানুষের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধি পাবে, সম্প্রসারিত হবে পর্যটন শিল্প।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার-মহেশখালী ঘাটে পুরাতন জেটিটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় পর্যটক ও যাত্রীদের সুবিধার্থে আরেকটি নতুন জেটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। ৩৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন জেটির দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার ও প্রস্থ ৭ দশমিক ৩ মিটার। ৭০০ মিটারের জেটির মধ্যে ৩০০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। এই নির্মাণকাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

এলজিইডি জানায়, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে মহেশখালীর গোরকঘাটে আধুনিক মানের একটি জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে।এ জেটিতে থাকবে দুই লাইনের যান চলাচল সড়ক, বিশ্রামাগার, প্রার্থনা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য জায়গা এবং টয়লেটসহ বিনোদনের ব্যবস্থা।

মহেশখালী স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি আতা উল্লাহ বোখারী বলেন, গত কয়েকবছর ধরে মহেশখালীতে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন অন্তত পাঁচহাজার মানুষ এ জেটি দিয়ে যাতায়াত করেন। এদের মধ্যে গড়ে পাঁচ শতাধিক পর্যটক থাকেন। জেটি এলাকা ভরাট হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। নির্মাণাধীন জেটির কাজ শেষ হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কেটে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

মহেশখালী পৌরসভার তথ্যমতে, গোরকঘাটার পূর্বপাশে ১৯৯৮ সালে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০০ মিটার দীর্ঘ একটি জেটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ২৭ বছরেও জেটির কোনো সংস্কার হয়নি। বর্তমানে জেটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটলের সৃস্টি হয়েছে। ভেঙে গেছে দুই পাশের রেলিং। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ছয় বছর ধরে জেটির ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে নতুন করে আরেকটি জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে।

কক্সবাজারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান জানান, নতুন জেটির নির্মাণকাজ শেষ হলে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর বাসিন্দাদের নৌপথে যাতায়াতের ভোগান্তি আর থাকবে না। ইতোমধ্যে নতুন জেটির নির্মাণকাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও যথাসময়ে শেষ হবে।