শিরোনাম

ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প’ নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনেস্কোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ সুজান ভাইজ, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান, অধ্যাপক ড. মাছুমা হাবিব, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আলিফ রুদাবা।
ইউজিসির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) জেসমিন পারভিন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ইউনেস্কোর সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প তরুণ প্রজন্মকে জুলাই আন্দোলনের ট্রমা কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা করবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের প্রোগাম আরও বিস্তৃত পরিসরে আয়োজন ও টেকসই উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।
শিক্ষা উপদেষ্টা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের ট্রমা থেকে উত্তরণে নিবিড় তদারকি করা প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা নিরসনে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকার জন্য সমাজে পরিবর্তন এসেছে। গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে ইউজিসির প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ‘সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প’ গ্রহণের জন্য ইউনেস্কোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ইউনেস্কোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ সুজান ভাইজ বলেন, তরুণদের নানা ধরনের ট্রমা কাটিয়ে উঠতে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে আসা এবং যুবকদের সুরক্ষায় একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের চেয়ে এর বাস্তবায়ন বেশি চ্যালেঞ্জিং জানিয়ে তিনি সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে গল্প ও ভিডিওচিত্রের জন্য ১৪ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া, প্রকল্পের আওতায় ৩টি বই প্রকাশ করা হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহযোগিতা করবে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং ইউনেস্কোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় দেশের ২২টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।