বাসস
  ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:২৭

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা: খাদ্য উপদেষ্টা

খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ফাইল ছবি

ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছে।

তিনি আজ খাদ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে আমন ২০২৪-২৫ ও বোরো -২০২৫ এর সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান- ২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আমন ও বোরো মৌসুম লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহের পরিমাণ, চুক্তির পরিমাণ, ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনা, দক্ষতা, সততা, সমন্বয় ইত্যাদি বিবেচনায় খাদ্য অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের মধ্যে ৩১ জনকে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে একজন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে পাঁচজন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে দশজন এবং ব্যবস্থাপক-চলাচল ও সংরক্ষণ কর্মকর্তা-ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ১৫ জনসহ মোট ৩১ জনকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানই ভেঙে পড়েছিলো। কিন্তু এদিক থেকে ব্যতিক্রম ছিলো খাদ্য অধিদপ্তর। এ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা সব সময়ই নানা রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যাচ্ছে।

চ্যালেঞ্জ কাউকে না কাউকে নিতে হয়। দেশের জন্য কাজ করাও গৌরবের। পুরস্কারপ্রাপ্ত খাদ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের মোট ৩১ জন কর্মকর্তা- কর্মচারীকে তিনি অভিনন্দন জানান।

তিনি আরও বলেন, আমন মৌসুমের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা মিনিমাম কিন্তু সংগ্রহ করতে হবে ম্যাক্সিমাম। আমন মৌসুমের ধান চালের সংগ্রহ মূল্য যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

এতে কারোই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই সকলকে আন্তরিকতার সঙ্গে সংগ্রহ অভিযান সফল করার জন্য নির্দেশনা দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন চলে যাব তখন নিয়ম অনুযায়ী যে পরিমাণ খাদ্য মজুত থাকার কথা, তার চেয়ে বেশি থাকবে ইনশাআল্লাহ। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে।’

এ নির্বাচনে খাদ্য অধিদপ্তরের জেলা- উপজেলা পর্যায়ের অনেক কর্মকর্তা- কর্মচারীকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে হবে, বিষয়টি বিবেচনায় রেখে মধ্য ফেব্রুয়ারির আগেই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান চাল সংগ্রহের জন্য সচেষ্ট হতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘এক্ষেত্রে কোনো প্রকার শৈথিল্য গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা যতবেশি অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ করতে পারবো, সেটা আমাদের জন্য মঙ্গল। কারণ আমাদের তাহলে খুব বেশি আমদানি করতে হবে না।’

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, কোনো কৃষক ধান বিক্রির জন্য নিয়ে আসলে তাকে ফেরত দেওয়া যাবে না। শুধু ধানের আর্দ্রতার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। কোন গুদামে বস্তাবন্দি পঁচা চাল পাওয়া গেলে এটা বরদাস্ত করা হবে না। শাস্তি দেওয়া আমাদের দায়িত্ব না, সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিগত বোরো মৌসুমে দেশের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ ধান চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এটা খাদ্য অধিদপ্তরের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের আন্তরিক চেষ্টার ফলে সম্ভব হয়েছে। এ জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান।

চলমান আমন মৌসুমেও সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে সংগ্রহ অভিযান সফল করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান এবং সকলকে চলমান আমন মৌসুমের সংগ্রহ অভিযান সফল করার জন্য নির্দেশনা দেন।