শিরোনাম

ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক, ডাকসুর সাবেক ভিপি, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, বিজয় দিবসের তাৎপর্যকে কেবল অতীতে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। এটি একটি নৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রগতিশীল অঙ্গীকারের দিন। সুদীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আমাদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান চরম সত্যটি উন্মোচিত করেছে—যে রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল, তার অভ্যন্তরে এখনো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার ভিত্তিক প্রজাতন্ত্র অনুপস্থিত।
জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসস-এর সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নতুন বাস্তবতায় বিজয় দিবসের নতুন পাঠ। এই নতুন এবং কঠিন রাজনৈতিক বাস্তবতায়, বিজয় দিবসে ‘৭১ ও ২৪ এর গণআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের অন্যতম প্রধান কর্তব্যটি যুক্ত হয়ে যায়। সেই কর্তব্যটি হলো: ঔপনিবেশিক নিপীড়নমূলক, স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা উচ্ছেদ করে সকল জনগণের অংশগ্রহণ ভিত্তিক নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। কারণ, মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল শোষণমুক্ত সমাজ, জনগণের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদাপূর্ণ নাগরিক জীবন নিশ্চিত করা। দীর্ঘ স্বৈরশাসন ও বৈষম্যের ফলে সেই চেতনা বারবার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।
আ স ম আবদুর রব বলেন, বিজয় কোনো স্থির বা স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্জন নয়, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং নিরন্তর সংগ্রামের নাম। যখন শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্র ও মানবিক মর্যাদার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়, তখন আমাদের বিজয় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান সেই অসম্পূর্ণতা পূরণের এক ঐতিহাসিক ডাক দিয়েছে। সুতরাং, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই বিজয় দিবসের প্রকৃত লক্ষ্য হবে- বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণ করা, যেখানে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার সুরক্ষিত থাকবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত করা-কোনো অভ্যন্তরীণ বা বহিরাগত শক্তি যেন রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতায় হস্তক্ষেপ করতে না পারে। প্রজাতন্ত্রের ওপর জনগণের প্রকৃত মালিকানা অর্থাৎ সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা কর। আজকের বিজয় দিবস হোক বৈষম্যহীন প্রজাতন্ত্র নির্মাণ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অংশীদারিত্বের গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি পূরণের নতুন অঙ্গীকার।