বাসস
  ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:১০
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:২৩

উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন : শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার সোমবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন বিষয়ক এক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন। ছবি : পিআইডি

ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত ও দায়িত্বশীল উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের পারস্পরিক কর্মসম্পর্ক জোরদারকরণ বিষয়ক স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব রেহানা পারভীন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্ব অত্যন্ত জটিল ও চ্যালেঞ্জপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান সংকট প্রশাসনকে প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের পর শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা বৃদ্ধি পাওয়ায় তরুণদের মানসিক অবস্থানেও পরিবর্তন এসেছে।

তিনি এই কঠিন সময়ে দায়িত্বশীলতা ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় শিক্ষা প্রশাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

সভায় অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া সুপারিশসমূহ গুরুত্বসহকারে নথিভুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যকর করা হবে। পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি বিষয়গুলো ভবিষ্যৎ সরকারের জন্য সুপারিশ আকারে সংরক্ষণ করা হবে।

তিনি বলেন, এ ধরনের সংলাপ আরও আগে হওয়া প্রয়োজন ছিল এবং ভবিষ্যতেও শিক্ষা খাতের উন্নয়নে নিয়মিত আলোচনা ও যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

কর্মশালায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) শারমিনা নাসরীন।

মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ড. মো. মাকসুদ হেলালী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু তাহের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। 

আরও বক্তব্য রাখেন, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গাকৃবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান। 

এ ছাড়াও কর্মশালায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রারগণ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় অংশীজনরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে দীর্ঘসূত্রিতা, গবেষণা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাজেট স্বল্পতা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সক্ষমতা বাড়ানো, শিক্ষকদের লেজুরবৃত্তিক রাজনীতি মুক্ত হওয়া, সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাত মানবসম্পদ তৈরি ও টেকসই, জ্ঞানভিত্তিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত ৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কার্যক্রম চালুকৃত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫১টি। এরমধ্যে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ২০টি, কৃষি ও ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ৮ টি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ১৫টি এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৮টি।