বাসস
  ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৩০

ইউক্রেন পুতিনের বাসভবনে হামলা করেছে, অভিযোগ রাশিয়ার, কিয়েভ বলেছে এটি ‘মিথ্যা’

ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : রাশিয়া গতকাল সোমবার অভিযোগ করেছে, যে, ইউক্রেন রাশিয়ার  প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একটি বাসভবনে ডজনখানেক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। 

তবে ইউক্রেন এ অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়েছে এবং বলেছে, এটি যুদ্ধ শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে রাশিয়া এ কথা বলছে।

খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, যিনি সাধারণত ড্রোন হামলার ঘোষণা দেন না, তিনি বলেন, ইউক্রেন গত রোববার গভীর রাত থেকে গতকাল সোমবার ভোরের মধ্যে নোভগোরোদ অঞ্চলে পুতিনের বাসভবনের দিকে ‘৯১টি দীর্ঘপাল্লার ড্রোন নিক্ষেপ করে, যেগুলোর সবকটিই ভূপাতিত করা হয়েছে।

লাভরভ বলেন, ‘অপরাধী কিয়েভ শাসনের সম্পূর্ণ অবক্ষয়ের প্রেক্ষাপটে, যা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের নীতিতে চলে গেছে, রাশিয়ার আলোচনার অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা হবে।’ তবে তিনি রাশিয়ার দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি বা বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার দাবিকে ‘সম্পূর্ণ মনগড়া’ বলে অভিহিত করেন, যা শান্তি প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে তৈরি। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি গতকাল সোমবার পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন, সমালোচনার তীর ঘুরিয়ে দেন কিয়েভের দিকে।

ট্রাম্প ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে  তার বাসভবনে কথিত হামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন  ‘আমি এটা পছন্দ করি না,  এটা ভালো নয়,’  ‘জানেন কে আমাকে এ কথা বলেছে? প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে আমাকে এটা সম্পর্কে বলেছেন।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘এটি একটি নাজুক সময়। এটি সঠিক সময় নয়।’

তিনি বলেন, শান্তি প্রক্রিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রাশিয়ার এই অভিযোগ এলো।

ইউক্রেন বলছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রণীত শান্তি পরিকল্পনার ৯০ শতাংশে তারা সম্মত হয়েছে, যার মধ্যে যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়টিও রয়েছে।

তবে ভূখণ্ড সংক্রান্ত বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। রাশিয়া কয়েক মাস ধরে যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রসর হচ্ছে। 

গতকাল সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে পুতিন বলেন, তিনি শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি এখনও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে কথিত ড্রোন হামলার প্রেক্ষিতে রাশিয়ার আলোচনার অবস্থান ‘পর্যালোচনা’ করবেন, এমনটাই জানিয়েছে ক্রেমলিন।

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায়, একে তারা ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছে, যার উদ্দেশ্য ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ করা এবং ন্যাটোর সদস্যপদ ঠেকানো।

কিয়েভ ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপীয় ভূখণ্ডে সবচেয়ে বড় ও প্রাণঘাতী এই যুদ্ধটি উসকানিহীন ও অবৈধ ভূমি দখলের চেষ্টা, যা ব্যাপক সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছে।