শিরোনাম

ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ক্ষমতাচ্যুত নেতা বাশার আল-আসাদের আমলে সিরিয়ার ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা স্থায়ীভাবে প্রত্যাহার করেছে মার্কিন কংগ্রেস। বুধবার নেওয়া এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগ ফেরার পথ সুগম হল।ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
সাবেক জিহাদি নেতা আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার নতুন সরকারের মিত্র হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব ও তুরস্কের অনুরোধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেই দুইবার এই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছিলেন।
তবে শারা এই নিষেধাজ্ঞার স্থায়ী অবসান চেয়েছিলেন। তার আশঙ্কা ছিল, কাগজে-কলমে নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকলে আইনি ঝুঁকির ভয়ে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিরিয়ায় বিনিয়োগ করতে সাহস পাবে না।
বার্ষিক প্রতিরক্ষা প্যাকেজের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের বিতর্কিত ‘সিজার অ্যাক্ট’ বাতিলের প্রস্তাবটি মার্কিন সিনেটে পাস হয়। হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে আগেই অনুমোদিত এই বিলটির পক্ষে সিনেটে ৭৭-২০ ভোটে জয় পাওয়া যায়। এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সই করলেই এটি আইনে পরিণত হবে।
উভয় দলের আইনপ্রণেতাদের সমর্থনপুষ্ট এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য জিন শাহীন বলেন, ‘কয়েক দশকের অকল্পনীয় কষ্টের পর সিরীয় জনগণকে নতুন করে দেশ গড়ার সুযোগ দিতে এটি একটি চূড়ান্ত পদক্ষেপ।’
দামেস্ক এই সিদ্ধান্তকে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন হিসেবে অভিহিত করেছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সিজার অ্যাক্ট বাতিলের পক্ষে ভোট দিয়ে সিরিয়ার জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা মার্কিন সিনেটের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপ সিরিয়া ও বিশ্বের মধ্যে অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
‘সিজার অ্যাক্ট’ ছিল সিরিয়ার ওপর আরোপিত সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। আসাদের কারাগারে হওয়া নৃশংসতার ছবি তোলা এক বেনামি আলোকচিত্রীর ছদ্মনামে এই আইনের নামকরণ করা হয়েছিল। এই আইনের ফলে সিরিয়া আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল এবং দেশটিতে সব ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ ছিল।
এক বছর আগে এক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আহমেদ আল-শারার যোদ্ধারা দামেস্ক দখল করে নেয়। বর্তমানে শারা তার আগের বেশভূষা বদলে স্যুট পরে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। গত মে মাসে রিয়াদ সফরে ট্রাম্পের সাথে প্রথম সাক্ষাতেই তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের নজর কাড়তে সক্ষম হন।