শিরোনাম
ঢাকা, ২০ জুন, ২০২৫ (বাসস) : কাচের বোতলে বিক্রি হওয়া পানীয়, যেমন পানি, কোমল পানীয়, বিয়ার ও ওয়াইনে প্লাস্টিকের বোতলের চেয়ে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা রয়েছে। ফ্রান্সের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা (আনসেস) পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্বজুড়ে বাতাস, খাবার এমনকি মানবদেহেও এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি আগেই শনাক্ত হয়েছে। যদিও মাইক্রোপ্লাস্টিকের কারণে সরাসরি স্বাস্থ্যের ক্ষতির প্রমাণ এখনো সুস্পষ্ট নয়, তবে এই বিষয়ে গবেষণা দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে।
প্যারিস থেকে এএফপি জানায়, গবেষণাটি গত মাসে জার্নাল অব ফুড কম্পোজিশন এন্ড এনালাইসিস-এ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণা পরিচালক গিয়োম দুফলোস জানান, বিভিন্ন ধরনের বোতলজাত পানীয়তে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ কতটা ভিন্ন হতে পারে, তা খুঁজতেই এ গবেষণা চালানো হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কাচের বোতলে বিক্রি হওয়া কোমল পানীয়, লেমনেড, আইস টি ও বিয়ারে গড়ে প্রতি লিটারে প্রায় ১০০টি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা রয়েছে, যা প্লাস্টিক বোতল বা ধাতব ক্যানের তুলনায় ৫ থেকে ৫০ গুণ বেশি।
গবেষণার মূল কাজ পরিচালনাকারী পিএইচডি শিক্ষার্থী আইসেলিন শাইব বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম প্লাস্টিক বোতলেই বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকবে। কিন্তু কাচের বোতলের নমুনাগুলোতে পাওয়া কণাগুলোর গঠন, রং ও উপাদান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেগুলো আসলে বোতলের ঢাকনার বাইরের রঙ থেকেই এসেছে।’
সংস্থার বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকনাগুলোর গায়ে সম্ভবত সংরক্ষণের সময় ঘর্ষণের ফলে সূক্ষ্ম আঁচড় ছিল। এতে করে প্লাস্টিকের ছোট ছোট কণা ঢাকনার গায়ে লেগে গিয়ে পরে তা পানীয়তে মিশে যেতে পারে।
সাধারণ পানি, স্পার্কলিং পানি ও ওয়াইনে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কাচের বোতলে পানি ছিল গড়ে ৪.৫ কণা এবং প্লাস্টিক বোতলে ১.৬ কণা। ওয়াইনে কণার উপস্থিতি ছিল আরও কম, এমনকি কাচের বোতলের ঢাকনা থাকলেও।
দুুফলোস বলেন, ওয়াইনে কম মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। তবে প্রতি লিটারে কোমল পানীয়তে গড়ে ৩০টি, লেমনেডে ৪০টি এবং বিয়ারে ৬০টি কণা পাওয়া গেছে।
আনসেস জানায়, এখন পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিকের জন্য কোনো স্বাস্থ্য-ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রা নির্ধারিত হয়নি, তাই এই কণাগুলো কতটা ক্ষতিকর, তা বলা কঠিন।
তবে বোতলের ঢাকনা থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক কমানোর উপায় রয়েছে। একটি পরীক্ষামূলক পদ্ধতিতে দেখা গেছে, ঢাকনাগুলো বাতাস দিয়ে পরিষ্কার করার পর পানি ও অ্যালকোহল দিয়ে ধুলে কণার উপস্থিতি ৬০ শতাংশ কমে যায়।