বাসস
  ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:২৩

লালমনিরহাটে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন স্থবির

ছবি: বাসস

বিপুল ইসলাম

লালমনিরহাট, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য জেলার মতো লালমনিরহাটেও ঘন কুয়াশা ও শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। ভোগান্তি বেড়েছে মানুষের। 

রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র রায় বাসসকে জানিয়েছেন, আজ শুক্রবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ছিল ১০০ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, আগামী দুই দিন তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে এবং মাসের শেষ দিকে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে দিনের আলোয়ও সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। শীতে ঘরের বাইরে বের হতে পারছে না সাধারণ মানুষ। এর ফলে দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান ও অটোচালকদের আয় অর্ধেকে নেমেছে। কৃষকরা শাকসবজি উৎপাদন ও সংরক্ষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন, আর নদীতীরবর্তী ও গ্রামাঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাবও বেড়েছে।

জেলার খেটে খাওয়া মানুষ তীব্র শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে কাজে বের হচ্ছেন। 

জেলা সদরের বড়বাড়ী ইউনিয়নের ভ্যানচালক নাজমুল হক বাসসকে বলেন, পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাজ করতে অনেকটা কষ্ট হচ্ছে। 

পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আশরাফুল হক জানান, পেটের দায়ে কষ্ট সহ্য করেই মাঠে নামতে হচ্ছে। 

আদিতমারী উপজেলার অটোচালক শহিদুল হক বাসসকে বলেন, কয়েক দিন ধরে আয়ের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। 

কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষক আলী আকবর শীত ও কুয়াশার কারণে শাকসবজির ফলন নিয়ে উদ্বিগ্ন। একইভাবে হাতীবান্ধার কৃষিশ্রমিক জলিল হক বাসসকে বলেন, প্রচণ্ড ঠান্ডায় হাত-পা জমে গেলেও জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে।

এদিকে জেলার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে শীতে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডা. তপন কুমার রায় জানান, সর্দি-জ্বর, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া বেশি দেখা যাচ্ছে। কিছু শিশুর শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও খিঁচুনি লক্ষ্য করা গেছে। তিনি অভিভাবকদের সতর্ক করে বলেন, শিশুদের গরম পানি, পুষ্টিকর খাবার ও তাজা ফল-শাক খাওয়ানো জরুরি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বাসসকে বলেন, শীত ও ঠান্ডার মধ্যে আপাতত ফসল নিরাপদ রয়েছে এবং কৃষকদের ক্ষতি রোধে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। 

জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান, শীতের তীব্রতা বিবেচনায় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।