শিরোনাম

ঢাকা, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু বন্যা-প্রবণ অঞ্চলে ২০১২ সালের পর এ বছরের নভেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
প্যারিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারসহ কম্বোডিয়া ও লাওসের কিছু অংশে নভেম্বর মাসে গত এক দশকের মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)-এর মাসিক তথ্য অনুযায়ী এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রায় পুরো শ্রীলঙ্কাতেই রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টি সাধারণ ঘটনা হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড় আরও ঘন ঘন ও তীব্র হচ্ছে। এর ফলে কিছু এলাকায় নভেম্বর মাসের গড় (১৯৯১-২০২০) বৃষ্টিপাতের তুলনায় এক মিটার পর্যন্ত বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার প্রভাবে শ্রীলঙ্কায় প্রবল বর্ষণ ঘটায়, যার ফলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।
শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত ৪১০ জন মারা গেছে এবং ৩৩৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। প্রায় ১৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে এক ভয়াবহ ঝড়ের আঘাতে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ১৭৬ জন এবং মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১২ জনে। পাঁচ শতাধিক মানুষ নিখোঁজ এবং প্রায় ১১ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পরিবেশবিদ, বিশেষজ্ঞ এবং ইন্দোনেশিয়া সরকারও বলেছে, দেশটিতে বন উজাড়ের কারণে হঠাৎ বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়েছে। গত মাসে জাভা দ্বীপে তীব্র আবহাওয়ায় অন্তত ৩৮ জন প্রাণ হারিয়েছিল।
দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ডে নভেম্বর মাসে কিছু এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১.৫ মিটার ছাড়িয়েছে। এ তথ্য এসেছে আবহাওয়া কেন্দ্রের পরিমাপ, স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ ও আবহাওয়া মডেলের সমন্বিত বিশ্লেষণ থেকে।
ভিয়েতনামে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বন্যায় এক সপ্তাহে অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছে। এ অঞ্চলে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসের সর্বমোট বৃষ্টিপাতে আগের রেকর্ড ভেঙেছে। একইভাবে লাওস ও কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকাতেও রেকর্ড হয়েছে।
এ মাসের শুরুতে টাইফুন ‘কালমায়েগি’ ভিয়েতনামে আঘাত হেনেছে, এতে অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ফিলিপাইনে ২৩০ জনেরও বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।
পরের সপ্তাহে টাইফুন ‘ফাং-ওয়ং’ ফিলিপাইনে আঘাত হেনে উত্তরাঞ্চলে প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু ঘটায়। সেখানেও বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভেঙেছে।