বাসস
  ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:২৭

দুর্ঘটনায় হতাহত কমাতে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি

ছবি: বাসস

ঢাকা, ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে এখনই সমন্বিত ও কার্যকর একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা জরুরি। 

আজ সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘টেকসই উন্নয়নে সড়ক নিরাপত্তা আইন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ কথা বলেন।

তারা জানান, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা রোডক্র্যাশকে প্রতিরোধযোগ্য একটি অসংক্রামক রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি ৩.৬) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী রোডক্র্যাশজনিত মৃত্যু ৫০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য রয়েছে, যার জন্য বাংলাদেশকে এখনই দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।

বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের রোড সেফটি ইনজুরি অ্যান্ড প্রিভেনশন প্রোগ্রামের ম্যানেজার মোহাম্মদ ওয়ালী নোমান। তিনি জানান, দেশে প্রতি বছর গড়ে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় এবং আহত হয় আরও বহু মানুষ। 
বিআরটিএ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, এসব ঘটনার প্রায় ৭০ শতাংশের জন্য দায়ী অতিরিক্ত গতি ও নিরাপত্তা সরঞ্জামের ঘাটতি।

মুক্ত আলোচনায় তরুণরা বলেন, রোডক্র্যাশ তরুণদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কঠোর করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কোনো একক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নয়। গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, পরিবহন মালিক শ্রমিক, স্থানীয় সরকার সব পক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টায় রোডক্র্যাশে হতাহতের সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমানো সম্ভব। এজন্য নতুন স্বতন্ত্র আইন প্রণয়ন দরকার।

তিনি আরও বলেন, ‘৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সড়কে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারান। অথচ তারাই আগামীর অর্থনীতির চালিকাশক্তি। তাই সড়ককে নিরাপদ করা জরুরি। এজন্য যা যা করা দরকার, আমরা সেটি করতে প্রস্তুত আছি।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, রোডক্র্যাশজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে এবং পরিবারকে আর্থিক সংকটে ফেলছে।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রামের ম্যানেজার এম খালিদ মাহমুদ। 

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (এস্টেট) নিখিল কুমার দাস, জিএইচএআই’এর কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর ড. মো. শরিফুল আলম, হাইওয়ের পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টের জেনারেল হাবিবুর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের রোড সেফটি প্রোগ্রামে পরিচালক ডা. মাহফুজু রহমান প্রমুখ।