শিরোনাম

ঢাকা, ৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : চিকিৎসা, রপ্তানি এবং অবকাঠামো নির্মাণ খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেশের তিন জেলায় পৃথক এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিচালিত অভিযানে চিকিৎসাসেবা প্রদানে নানাবিধ অনিয়ম ও হয়রানির চিত্র উঠে আসে। দুদকের জেলা কার্যালয়, কিশোরগঞ্জ থেকে পাঠানো এনফোর্সমেন্ট টিম ছদ্মবেশে হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে বহির্বিভাগে আগত রোগীদের ওষুধ সরবরাহে অনিয়ম লক্ষ্য করে।
অভিযানকালে দেখা যায়, রোগীদের জন্য রান্না করা মাংসের ওজন নির্ধারিত ১৮০ গ্রামের স্থলে মাত্র ১২৫ গ্রাম এবং পাউরুটির ওজন ১০০ গ্রামের পরিবর্তে ৫০ গ্রাম সরবরাহ করা হয়, এছাড়া নির্ধারিত ৫০ গ্রাম চিনি দেওয়া হয়নি। রান্নাঘরে বাধ্যতামূলক ডায়েট চার্ট প্রদর্শন না করা, রান্নাঘর ও বাথরুমের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা, মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার এবং অপরিচ্ছন্ন বেডশিট ব্যবহারের প্রমাণ মেলে।
ডাক্তারদের উপস্থিতি সময়সূচি অনুযায়ী না থাকায় রোগীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় বলে টিমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া একজন চিকিৎসক কর্তৃক হাসপাতালের কোয়ার্টারে ব্যক্তিগত চেম্বার পরিচালনার সত্যতাও পাওয়া গেছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে দুদক টিম এবং সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
অন্যদিকে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) কর্তৃক মেলা ও প্রদর্শনী আয়োজন সংক্রান্ত নানাবিধ দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক প্রধান কার্যালয়, ঢাকা থেকে আরেকটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে টিম ৭ম চীন দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো এবং ২৭তম চীন আমদানি ও রপ্তানি মেলা -এ অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে জামানত গ্রহণে অনিয়ম, পোল্যান্ড শো এক্সপো ২০২২-এ অংশগ্রহণ অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রিতা, এবং প্রশাসনিক দুর্নীতি ও অসাধু প্রক্রিয়ার প্রাথমিক সত্যতা পায়।
এসময় অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা এবং কিছু আলামত ইনভেন্টরি করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
এছাড়া নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নোয়াখালী একটি অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানকালে স্টেডিয়াম সরেজমিনে পরিদর্শন এবং নিরপেক্ষ প্রকৌশলীর মাধ্যমে নির্মাণসামগ্রী পরীক্ষা করা হয়। প্রাথমিকভাবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ মেলে। প্রকৌশলীর পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণ শেষে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি চলছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।