বাসস
  ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:১৯

চট্টগ্রাম বাজারে শীতের সবজি, কমতে শুরু করেছে দাম 

শীতের সবজি আসতে শুরু করায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আড়ত ও কাঁচাবাজারে। ছবি: বাসস

চট্টগ্রাম, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : শীতের সবজি আসতে শুরু করায় গত সপ্তাহের চেয়ে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আড়ত ও কাঁচাবাজারে।

পুরোদমে শীতের আবহ এখনো তৈরি না হলেও এরইমধ্যে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে আগাম ফলনের শীতকালীন শাক-সবজির। এর মধ্য দিয়ে বাজারে সবজির চড়া দাম কিছুটা পড়তির দিকে। কমেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামও। তবে মাছ-মাংস ও অধিকাংশ মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের বৃহত্তম সবজির আড়ত ও কাঁচাবাজার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার, বহদ্দারহাট ও চকবাজারসহ ভ্রাম্যমাণ বিভিন্ন দোকানে নিত্যপণ্যের দরের এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি, মূলা, শিম প্রচুর পরিমাণে এসেছে। গত সপ্তাহে ফুলকপি প্রতি কেজি ২০০ টাকা, বাঁধাকপি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, মূলা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। 

সপ্তাহের ব্যবধানে ফুলকপি রিয়াজউদ্দিন বাজারে প্রতিকেজি ১২০ টাকা ও ভ্রাম্যমাণ দোকানে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাঁধাকপি বাজারে ৬০ টাকা ও ভ্রাম্যমাণ দোকানে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূলা প্রতি কেজি ৫০ টাকায় নেমেছে। আর শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ টাকায়।

কয়েক সপ্তাহ ধরে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া গোল বেগুন এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০ টাকার লম্বা বেগুনের দাম এখন ৬০ টাকা। দাম কমেছে টমেটো, মিষ্টিকুমড়ো, কচুরমুখী, ঝিঙা ও চিচিঙ্গার। ১৪০ টাকার টমেটো এখন ১২০ টাকা, ৬০ থেকে ৭০ টাকার কচুরমুখী, ঝিঙা ও চিচিঙ্গার দাম এখন ৫০ থেকে ৬০ টাকা। মিষ্টিকুমড়ো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

অন্যান্য সবজির মধ্যে প্রতি কেজি দেশি গাজর ১৪০ টাকা, চায়না গাজর ১২০ টাকা, দেশি শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

কাঁচামরিচের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে আবার ২০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনেপাতা কেজিতে ৫০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।

এছাড়া আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মানভেদে লাউ ৮০ থেকে ৯০ টাকা, চালকুমড়া ৭০ থেকে ৮০ টাকা, প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। শাকের মধ্যে কচুশাক ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া শাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা ও লালশাক ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রিয়াজউদ্দিন বাজারের সবজি আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিবলী ফারুক বলেন, ‘শীতকালীন সবজি এখনও মাঠ থেকে পুরোপুরি আসেনি। তবে আগাম ফলন এবার ভালো হয়েছে। এজন্য আড়তে সরবরাহ বেড়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে প্রচুর সবজি আসছে। এজন্য প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমে আসছে। কিছু কিছু সবজির দাম কেজিতে ৪০-৫০ টাকাও কমেছে।’

বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, এবছর শীত আসার আগেই উত্তরবঙ্গ থেকে প্রচুর সবজি আসছে। এজন্য প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। আশা করি পুরোদমে শীতকালীন সবজি আসা শুরু করলে আরও কিছু সবজির দাম কমবে।

গত সপ্তাহে বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আজ শুক্রবার রিয়াজউদ্দিন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে দেশি ও সোনালি মুরগির দাম কমেনি। সোনালি মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৪৫ টাকা আর দেশি মুরগি ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া গত সপ্তাহে বাজারে ফার্মের ডিমের দাম ছিল ডজন প্রতি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। সেটা এ সপ্তাহে ১৩৫ টাকায় নেমেছে। অলিগলির দোকানগুলোতে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ২২০ টাকায়।

বাজারে অন্যান্য মাংসের মধ্যে গত সপ্তাহের মতো গরু ও মহিষের মাংষ বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়। আর খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

বাজারে মাছের বাড়তি দর এখনও নিম্নমুখী হয়নি। বড় সাইজের বাগদা চিংড়ি প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৮৫০ ও ছোট চিংড়ি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় রুই ৪৫০ থেকে ৫৮০ টাকা, মাঝারি ৪৬০ টাকা ও ছোট রুই ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতলা মাছ ৩৬০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ছোট কোরাল মাছ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, সিলভার কার্প ২৫০, পাবদা ৪০০, রূপচাঁদা ৮৫০ ও টেংরা ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে স্থিতিশীল আছে পেঁয়াজ, আদা-রসুনের দাম। আকার ও মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ৭০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা করে। দেশি রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, চায়না আদা ১৮০ টাকা, ভারতীয় আদা মান ভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ দরে বিক্রি হচ্ছে।