শিরোনাম
গাজীপুর, ৩ জুন, ২০২৫ (বাসস) : গাজীপুরের শ্রীপুরের নয়নপুর নতুন বাজার এলাকায় জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানায় ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও এপিসি কার ভাঙচুরের ঘটনায় ২৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বাসসকে আজ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, শ্রীপুরের নয়নপুরে শ্রমিক আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের শ্রীপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয়া ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
শ্রীপুর থানার ওসি মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, আটককৃতদের ১৯ জনকে ইতোমধ্যে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদেরও থানায় হস্তান্তরের কথা জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ। শিল্প পুলিশের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন ওই কারখানার শ্রমিক মো. জাকির হোসেন (৩০)। এর জেরে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা আজ মঙ্গলবার সকালে কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের এপিসি গাড়ি। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১১জন পুলিশ সদস্য ও অর্ধশত কারখানার শ্রমিক আহত হন।
পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে সেখানে কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে। কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে ওই কারখানার শ্রমিক নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে মো. জাকির হোসেন (৩০) নিহত হন।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইতে গিয়েছিলেন জাকির। কিন্তু ছুটি না দিয়ে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণে তিনি অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। লাফিয়ে পড়ার পর তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কারখানার এজিএম জুবায়ের জানান, ওই শ্রমিক ছুটি চাইতে যাননি। বরং তিনি জানতে পেরেছেন পারিবারিক কলহের কারণে হতাশায় ভুগছিলেন। হতাশা থেকেই তিনি লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শিল্প পুলিশের গাজীপুরের শ্রীপুর সাবজোনের ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ বলেন, শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।