শিরোনাম
সিলেট, ২৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিলেট সেনানিবাসে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সেনানিবাস প্রাঙ্গণে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন ১৭ পদাতিক ডিভিশন সিলেট স্টেশন সদর দপ্তরের স্টেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান খান, পিএসসি। পরে অতিথিদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
র্যালি পরবর্তী এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ১৯৪৮ সাল থেকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালের আগষ্ট মাস থেকে সম্পৃক্ত হয়। প্রথমে ইউএন ইরান-ইরাক মিলিটারি অবজারভেশন গ্রুপ (ইউনিমগ) এর আওতায় আন্তর্জাতিক শান্তি প্রয়াসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়।
বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ৩৭ বছর ধরে শৃঙ্খলা, সততা, বিশ্বশান্তি রক্ষায় আদর্শ হিসাবে স্বীকৃত। বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আজ আমরা বিশ্বে শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণের ক্ষেত্রে অন্যতম বৃহৎ অংশীদারি একটি দেশ। আমরা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও সদা প্রস্তুত। ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, শান্তিরক্ষার এই সুমহান দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের মোট ১৬৮ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। ২৭২ জন সদস্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
তিনি তার বক্তব্যে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে জীবন উৎসর্গকারী সদস্যদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী ১৯৮৮ সাল থেকে, নৌ ও বিমান বাহিনী ১৯৯৩ সাল এবং পুলিশ বাহিনী ১৯৮৯ সাল থেকে শান্তিরক্ষা মিশনে বিচক্ষণতার সাথে অবদান রেখে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদশে সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনী বিশ্বের ৪৩টি স্থানে মোট ৬৩টি সফল শান্তিরক্ষা মিশন সম্পন্ন করেছে। এখন পর্যন্ত সেনা ও পুলিশসহ মোট ২ লাখ ৫৫৮ জন শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে অবদান রেখেছেন। বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে মোট ১০টি দেশ বা স্থানে মোট ৫ হাজার ৮১৮ জন শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। মোট ৩ হাজার ৬৪৫ জন নারী সদস্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছেন।
বর্তমানে সেনাবাহিনীর ৩৫৮ জন, নৌবাহিনীর ৮ জন, বিমান বাহিনীর ৭ জন এবং ৭১ জন নারী পুলিশসহ ৪৪৪ জন নারী শান্তিরক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন।
সিলেট এরিয়া ও ১৭ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এই আয়োজনে ডিভিশনের উর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অসামরিক প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার স্থানীয় প্রতিনিধি, শান্তিরক্ষী মিশনে অংশ নেওয়া অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত সদস্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, বাংলাদেশ পুলিশ এবং র্যাবের সদস্য, স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।