শিরোনাম

ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বর্তমান প্রশাসন সরকারি কর্মচারীদের জন্য নতুন পে স্কেলে ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী কাঠামো নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা নতুন বেতন কাঠামো এখনি কার্যকর করতে পারছি না। তবে পরবর্তী ধাপের জন্য একটি স্পষ্ট এবং ধারাবাহিক সিস্টেম প্রস্তুত করতে কাজ করছি।’
ড. সালেহউদ্দিন আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির দুটি পৃথক সভার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন।
তিনি জানান, নতুন বেতন কাঠামোর প্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি স্বাধীন কমিশন এবং প্রশাসনিক অনুমোদনের বহু স্তর রয়েছে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, পে কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে, সরকারের সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, পে কমিশনের কাজ অত্যন্ত জটিল ও স্বাধীন। এর সুপারিশ নির্ধারণে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। পৃথকভাবে একটি সিভিল পে কমিশন এবং একটি সশস্ত্র বাহিনী পে কমিশন কাজ করছে। তিনটি রিপোর্ট জমা হলে, সেগুলোকে মিলিয়ে ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে হবে, তারপরই তা বাস্তবায়ন শুরু করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, এই সমন্বয় সাধন প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ, কারণ এটি কয়েকটি পর্যায়ের সমীক্ষা ও পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে যাবে।
ড. সালেহউদ্দিন জানান, রিপোর্ট পাওয়ার পর সরকারকে সেগুলো মিলিয়ে দেখতে হবে। এরপর সচিব-স্তরের কমিটি এবং পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ পর্যালোচনা করবে। এই ধাপগুলো সম্পন্ন হওয়ার পরই বাস্তবায়নের বিষয়টি বিবেচনা করা সম্ভব।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে এই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নাও হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এই কারণেই আমি বলেছি, কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে আমরা এমন একটি সম্পূর্ণ কাঠামো ও সেটআপ তৈরি করার চেষ্টা করছি, যাতে পরবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে।’
সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে দেরি নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগের বিষয়ে তিনি ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এটি প্রায় আট বছর ধরে হয়নি। এত দীর্ঘ বিরতির পর আমরা নিজ উদ্যোগে এই পদক্ষেপ নিয়েছি। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি, এবং কর্মচারীদের এটিকে মূল্যায়ন করা উচিত। আমরা অলস বসে নেই; নতুন কাঠামোর ভিত্তি স্থাপনের জন্য কাজ করছি।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, সরকার সরকারি কর্মচারীদের প্রত্যাশার বিষয়ে সচেতন, তবে প্রক্রিয়াটি অবশ্যই প্রশাসনিক ও আর্থিক শৃঙ্খলার মধ্যে সম্পন্ন হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মোট বাজেটের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করতে হবে। বেতন সমন্বয় একমাত্র অগ্রাধিকার নয়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অন্যান্য উন্নয়ন খাতের জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’
ড. সালেহউদ্দিন আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার পে কমিশনের রিপোর্টগুলোকে যথাযথ গুরুত্বসহকারে বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, কমিশনগুলো স্বাধীনভাবে এবং মনোযোগের সঙ্গে কাজ করছে। রিপোর্ট প্রস্তুত হলে, আমি বিশ্বাস করি পরবর্তী সরকার সেগুলোর ওপর যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেবে।