শিরোনাম
নওগাঁ, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জেলার রাণীনগরে প্রীতম ও প্রিয়সী নামের দুই অসহায় শিশুকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজ কার্যালয়ে ওই দুই শিশুর হাতে ১৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন তিনি। এ সময় দুই শিশুর কাকা পলাশ চন্দ্র প্রামানিক ও উপজেলা পরিষদের সিএ আনছার আলী উপস্থিত ছিলেন। চেক পেয়ে দুই শিশু আনন্দের সাথে জানালেন আমরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই।
‘মা’ হারা ১১ বছরের ৭ম শ্রেণির প্রীতম ও ৭ বছরের ২য় শ্রেণির প্রিয়সী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ডাবলু প্রামাণিকের সন্তান।
আর পলাশ প্রামাণিক শিশু দুটির কাকা (চাচা)। তাদের বাড়ি উপজেলার কুজাইল হিন্দুপাড়া গ্রামে।
অপরদিকে তাদের কাকার চোখে ছিল আনন্দ ও আবেগের অশ্রু। খুশিতে শুধু ধন্যবাদ দিয়ে পাশে থাকার অনুরোধ জানালেন।
ইউএনও রাকিবুল হাসান তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা দুই ভাই বোন পড়াশোনা চালিয়ে যাবে। আমি সব সময় তোমাদের পাশে আছি। তোমাদের জন্য দোয়া রইল।
উল্লেখ, শিশু দু’টির মা পূর্ণিমা চিকিৎসার অভাবে গত ১১ এপ্রিল নিজ বাড়িতে মারা যান। মৃত্যুর একদিন আগেও প্রীতম ও প্রিয়সীর মা'র ইচ্ছে ছিল তার দুই সন্তানকে পড়াশোনা করানোর।
শিশু দু’টির কাকা জানান, এখনই হাত পেতে কিনতে হচ্ছে ছেলের গাইড বই। তবে মৃত বৌদির (ভাবির) স্বপ্ন পূরণের আশায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেবর পলাশ চন্দ্র প্রামাণিক।
মা হারা হয়েও থামেনি ছোট্ট দুই শিশুর স্বপ্ন। সকালে পুরোনো ব্যাগ কাঁধে তুলে নিয়ে তারা স্কুলে যায়। অন্যদের মতো নতুন পোশাক, দামি খাতা কলম নেই। অনেক সময় না খেয়েই ক্লাস করতে হয়। তবুও স্কুলে গিয়ে পড়তে চায়, বন্ধুদের মতো স্বপ্ন দেখে প্রিতম-প্রেয়সী। তাদের একমাত্র ভরসা কাকা পলাশ। যিনি গ্রাজুয়েশন শেষ করেও চাকরির পিছনে না ছুটে গ্রামে গ্রামে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালান।
অপরদিকে পলাশের জীবনের গল্প আরও করুন। বুদ্ধির পর থেকেই সুখ নামক শব্দটি তার কপালে জোটেনি। পড়াশোনার পাশাপাশিই কাঁধ তুলে নিতে হয়েছে সংসারের ভাড়। কিন্তু এই লড়াইয়ে কাকা পলাশ একা। অভাবের ঘূর্ণিপাকে থেমে না যায় প্রীতম আর প্রেয়সীর স্কুলে যাওয়ার স্বপ্ন। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসা ছাড়া হয়তো স্বপ্নগুলো স্বপ্নই থেকে যাবে, ঝরে যাবে নিমিষেই।