শিরোনাম
/হারুন অর রশিদ খান হাসান/
সিরাজগঞ্জ, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সিরাগঞ্জের এনায়েতপুরে যমুনায় তীব্র স্রোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে অন্তত ২৫টি বসত ভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
গবাদি পশুসহ ঘরবাড়ি, টিনের চাল চোখের সামনে নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের। ভাঙন অব্যাহত থাকলে বাড়ি-ঘর ছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়সহ অন্তত পাঁচটি স্কুল নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রোববার দুপুরে উপজেলার চাঁদপুরে গিয়ে দেখা যায়, কেউ ঘরের খুঁটি খুলছে, কেউবা টিনের চাল সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। নারীরা বিছানাপত্র ও রান্নার জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। আশপাশের বহু মানুষ যমুনা পাড়ে ভিড় জমিয়েছে।
সেখানে জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলের দিকে যমুনায় তীব্র স্রোত ও ঘূর্ণবর্তের সৃষ্টি হয়ে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর চরের বসতি লালচাঁন, জুড়ান, সাইফুল, রবি, ইয়াদুল, ডা. এরশাদের বাড়ি সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি কয়েক মিনিটের মধ্যে নদীতে ভেসে গেছে।
স্থানীয় আতাহার মণ্ডল জানান, তার ৭৩ বছব বয়সে প্রায় ২৫ বার নদী গর্ভে চলে গেছে বসত ভিটা। হঠাৎ করে যমুনার আগ্রাসী থাবায় লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এগুলো দেখলে কেউ স্বাভাবিক থাকতে পারবে না। বেশ কয়েক বছর ধরেই চাঁদপুর এলাকায় নদী ভাঙনে কয়েকশত বাড়ি ঘর নদীতে চলে গেছে। এখন আমরা যাবো কোথায়।
সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৫৫ মিটার দূরে আমাদের হাইস্কুল কমপ্লেক্স ভবন। এছাড়া অন্তত ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতের দিকে। দ্রুত নদীর তীর স্থায়ীভোবে সংরক্ষণে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করতে হবে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে স্কুলগুলো যেকোনো সময় নদী গর্ভে চলে যাবে।
স্থানীয় সমাজ সেবক হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন, আব্দুল মমিন ও শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙনের ভয়াবহতা দেখে আমরা হতবাক। চোখের সামনে কয়েশ মিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেল। প্রায় ৩০টি বসত ভিটা নদীতে ভেসে গেছে। আমরা আতঙ্কিত। এই চরের আশপাশের অন্তত ১২টি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল। ভাঙনে সবাই এখন আতঙ্কিত। ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানান তারা।
এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ পারভেজ জানান, প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা ও বেশ কিছু বসত ভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।