বাসস
  ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:৪২

গণতান্ত্রিক উত্তরণে সর্বস্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান

ছবি : বাসস

কুমিল্লা, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। 

আজ সকালে নগরীর হোটেল ওয়েসিসের হলরুমে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ আহ্বান জানান। ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লা জেলা ও মহানগর কমিটির যৌথ উদ্যোগে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। 

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, সুজন কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলি আহসান টিটু। এ অনুষ্ঠানে সুশীল সমাজ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বক্তারা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট, প্রশাসনিক প্রভাব এবং নির্বাচনি দুর্বলতায় জনগণের ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে তারা গণতান্ত্রিক চর্চা থেকে বিচ্যুত বলে উল্লেখ করেন। এর ফলে নাগরিক আস্থা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবার আগে রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। 

কুমিল্লা সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. আলি হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘মানুষ এখন রাষ্ট্র নিয়ে ভাবছে। এটি আশার দিক। গণভোটের চারটি শর্ত কঠিন হয়ে গেছে, এগুলো সহজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এমপিদের জমিদারি প্রথা বন্ধ করতে হবে। তারা জনগণকে প্রজা ভাবতে পারেন না। মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন দরকার, যাতে যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিরা এগিয়ে আসতে পারেন। অবৈধ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিপক্ষকে গ্রেপ্তার করে ‘ঘায়েল’ করার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। জনগণই দেশের মালিক। এই বোধ সমাজে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

আলহাজ শাহ আলমগীর খান বলেন, ‘একজন নারী ১২৮ বার ভোট দিয়েছেন। এমন অস্বাভাবিক ঘটনা  চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যেও পরিবর্তন আনতে হবে।’ নাগরিক সমাজের এই মতামত দেশের নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

বক্তারা আরও বলেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু নির্বাচনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। আস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন, সব দলের সমান রাজনৈতিক সুযোগ, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাদারিত্ব, নাগরিক সমাজের সক্রিয় ভূমিকা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা,রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও সহনশীলতা বৃদ্ধি।