বাসস
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২৩
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২৮

বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সচিবালয়ের অফিসকক্ষে গত ১ ডিসেম্বর তারিখে বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমানোর বিষয়ে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসি’র মধ্যকার সভায় এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহ হলো—প্রবাসীরা দেশে ছুটি কাটানোর সময়ে ৬০ দিন পর্যন্ত স্মার্টফোন রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন, ৬০ দিনের বেশি থাকলেই মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, প্রবাসীদের মধ্যে যাদের বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা ফ্রিতে মোট তিনটি ফোন সঙ্গে আনতে পারবেন।

অর্থাৎ যে সব প্রবাসীর বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা তাদের নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন সঙ্গে নিয়ে আসতে পারবেন ফ্রিতে। চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে তাদেরকে ট্যাক্স দিতে হবে। 

 যে সব প্রবাসীর বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ফ্রিতে আনতে পারবেন।

এক্ষেত্রে মোবাইল ক্রয়ের বৈধ কাগজটি নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। কেননা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চোরাচালানিরা সাধারণ প্রবাসীদের চাপাচাপি করে স্বর্ণ ও দামি মোবাইল ফোন ইত্যাদির শুল্কহীন পাচারে লিপ্ত রয়েছে।

চোরাচালানিদের এই অপচেষ্টা রোধ করার জন্যই ক্রয়কৃত মোবাইলের কাগজ সাথে রাখতে হবে। 

স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা হবে। এতে করে বৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে।

বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। এটা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সরকার কাজ শুরু করেছে। আর আমদানি শুল্ক কমালেই বাংলাদেশের ১৩-১৪টি ফ্যাক্টরিতে উৎপাদনকৃত মোবাইলের শুল্ক ও ভ্যাট কমাতে হবে, অন্যথায় কোম্পানিগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আমদানি ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক কমানো এবং তা সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি ও এনবিআর যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিকবার বসেছে এবং দ্রুততার সঙ্গে তারা কাজ শুরু করেছে।

এ ছাড়া, কারো অজান্তেই কেউ তার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কি-না, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। অপরাধ ও রেজিস্ট্রেশন ঝামেলা এড়াতে সব সময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করতে হবে।

বাংলাদেশে ক্লোন মোবাইল, চুরি বা ছিনতাই করা ফোন বন্ধ করা হবে।

এ ছাড়া রিফারবিসড মোবাইল আমদানি বন্ধ করা হবে।

১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে অবৈধভাবে আমদানি করা স্টক ফোনগুলোর মধ্যে যেগুলোর বৈধ আইএমইআই নম্বর আছে, সেই আইএমইআর লিস্ট বিটিআরসিতে জমা দিয়ে হ্রাসকৃত শুল্কে সেগুলোকে বৈধ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

তবে ক্লোন ফোন ও রিফারবিশড ফোনের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেওয়া হবে না।

১৬ ডিসেম্বর-এর আগে ব্যবহৃত সচল মোবাইল ফোন কোনোভাবেই বন্ধ হবে না।

এদিন থেকে চালু হচ্ছে এনইআইআর। সুতরাং বৈধ আইএমআইআই নম্বরহীন হ্যান্ডসেট ক্রয় থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অবৈধ আমদানিকৃত, চোরাচালানকৃত ও ক্লোন ফোন বাংলাদেশে বন্ধ করা হবে। 

দেশের ও বিদেশের পুরোনো ফোনের ডাম্পিং বন্ধ হবে। 

কেসিং পরিবর্তন করে এসব ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে ঢুকিয়ে যে রমরমা চোরাকারবারি ব্যবসা শুরু করা হয়েছে, সেটা বন্ধ করা হবে। 

এ ছাড়া বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে ভারত, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুতই এর বিরুদ্ধে কাস্টমস থেকে অভিযান চালানো হবে।

প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী), ২০২৫ এ মোবাইল সিমের ইকেওয়াইসি ও আইএমইআই রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ডেটা সুরক্ষার নিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে। 

নতুন একটি ধারা যোগ করে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত উপাত্ত লঙ্ঘনকারীদের অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে।