শিরোনাম

রাজশাহী, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : সাপে কাটা রোগীদের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে দেশের প্রথম বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।
উদ্যোগটির মূল উদ্দেশ্য সাপে কামড়জনিত মৃত্যুর হার কমানো এবং আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত ও কার্যকর চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
রামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহমেদ বৃহস্পতিবার ‘স্নেকবাইট অ্যান্ড টক্সিকোলজি ওয়ার্ড’-এর উদ্বোধন করেন।
তিনি জানান, এটি হাই-ডিপেনডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) মানের সুবিধাসম্পন্ন। শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগজনিত জটিলতাসহ অনান্য গুরুতর সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরাও সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন।
নতুন ওয়ার্ডে আটজন পুরুষ ও চারজন নারী রোগী থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজনে ওয়ার্ডের বাইরের রোগীদেরকেও জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হবে।
রামেকের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু শাহিন মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বাসসকে জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১ হাজার ২০৫ জন সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তাদের মধ্যে ২৬০ জন বিষধর সাপের কামড়ের শিকার।
তিনি আরও জানান, ওয়ার্ডটি চালুর আগে চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। জাতীয় সাপের কামড় ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা অনুসরণ করে প্রশিক্ষণটির আয়োজন করা হয়।
ডা. রহমান আরও জানান, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে মৃত্যুহার ছিল ২৭ শতাংশ। তবে উন্নত চিকিৎসার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ জানান, আগে সাপে কাটা রোগীদের সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হত। প্রায়ই ভুক্তভোগীরা দেরি করে হাসপাতালে পৌঁছাতেন।
তিনি বলেন, ‘এখন এইচডিইউ মানের জরুরি ইউনিট ও ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা তত্ত্বাবধানের ফলে সাপের কামড়ের রোগীরা তাৎক্ষনিক ও বিশেষায়িত চিকিৎসা পাবেন।’
তিনি আরও বলেন, নতুন ওয়ার্ডে চিকিৎসক ও নার্সের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি এবং পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুদের মাধ্যমে সমন্বিত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। এতে মৃত্যুহার আরও কমবে।
জানা যায়, প্রতিটি অ্যান্টিভেনম ডোজের দাম প্রায় ১৩ হাজার টাকা। সাধারণত প্রতি ডোজে ১০টি করে শিশি লাগে। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে একাধিক ডোজেরও প্রয়োজন হয়।
রামেক পরিচালক জানান, ‘সব ধরনের চিকিৎসা ও ওষুধ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। রোগী হাসপাতালে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু হবে, কোন বিলম্ব হবে না।