বাসস
  ২১ জুন ২০২৫, ১৯:০৭

বরগুনায় বাস চাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত

বরগুনা, ২১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : শনিবার দুপুরে আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে নবজাতক শিশুর চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী নেয়ার পথে মা মোশাদ্দেকা বেগম (২৪), নানা মৌলভী আজিজুল হক (৬৫) ও দাদী খালেদা বেগম (৫০) ইকরা লাক্সারী পরিবহন নামের বাসের চাপায় নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শিশুসহ তিনজন। 

কলাপাড়া উপজেলার গোলাখালী ইউনিয়নের বলইবুনিয়া গ্রাম থেকে মাওলানা জাহিদুল ইসলাম তার নবজাতক শিশুকে ডাক্তার দেখাতে ইজিবাইকে শনিবার দুপুরে বাড়ি থেকে পটুয়াখালী যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের কেওয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে কুয়াকাটাগামী ইকরা লাক্সারী পরিবহন যাত্রীবাহী ইজিবাইকটিকে চাপা দেয়। মুহুর্তের মধ্যে ইজিবাইকটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ওই ইজিবাইকের যাত্রী শিশুর নানা মৌলভী আজিজুল হক, দাদী খালেদা বেগম ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং শিশুটি ও শিশুটির মা মোসাদ্দেকা বেগম, বাবা মাওলানা জাহিদুল ইসলাম, দাদা মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও ইজিবাইক চালক ওহাব গাজী (৫২) আহত হন। 

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান শিশুটির মা মোসাদ্দেকাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহতদের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আহতদের মধ্যে ইজিবাইক চালক ওহাব গাজী ও মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে নিহত আজিজুল হক ও খালেদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। 

হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন। নানা মৌলভী আজিজুল হকের বাড়ি আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শী সোহেল হাওলাদার ও মেহেদী হাসান বলেছেন, কুয়াকাটাগামী বেপরোয়া গতির ইকরা লাক্সারী পরিবহনের গাড়ীটি পটুয়াখালীগামী ইজিবাইককে চাপা দিলে ইজিবাইকটি দুমড়ে মুচড়ে সড়কের পাশে পড়ে যায়। 

ঘটনাস্থলেই ইজিবাইকে থাকা যাত্রী একজন পুরুষ ও একজন নারী নিহত হন। 

নিহত মোসাদ্দেকার স্বামী মাওলানা জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, নবজাতক শিশুকে নিয়ে পটুয়াখালীতে ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছিলাম। আমার সাথে আমার স্ত্রী, শ্বশুর, দাদী, ফুফা ছিল। ইকরা পরিবহন গাড়ীটি আমাদের ইজিবাইককে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমার দাদী ও শ্বশুর মারা যান। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই হাসপাতালে আমার স্ত্রী মারা যান। আমার শিশু কন্যাও আহত হয়। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।  

আমতলী থানার এসআই মো. জলিলুর রহমান বলেছেন, মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লে্েক্স নেয়া হয়েছে।  

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেছেন, আহতদের হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন। 

আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেছেন, নিহত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। খবর পেয়েছি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির মা মারা গেছে। তিনি আরো বলেছেন, ঘাতক বাসটিকে আটক করা হয়েছে। চালক ও সহযোগী পালিয়ে গেছে। 

এই ঘটনায় এলাকা ও পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।