বাসস
  ২৮ জুলাই ২০২৫, ২০:০৭

শুনশান নীরব ছিল মাদারীপুর শহর

বেলাল রিজভী

মাদারীপুর, ২৮ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) :  সারা দেশে দিনের বেলা কারফিউ শিথিল করা হলেও মাদারীপুর ছিল শুনশান নীরব। প্রাণচঞ্চল নগরীটি সেদিন পরিণত হয় ভুতুড়ে নগরীতে। পুরো শহর জুড়েই ছিল আতঙ্ক। 

সারাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়লেও মাদারীপুরে ছিল তুলনামূলক বেশি উত্তেজনা। 

আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এই জেলায় ইতিহাস সৃষ্টি করে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা।

১৮ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। এই ঘটনায় মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বাবু শরীফ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর শতাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। এতে প্রশাসন ক্ষুব্ধ হওয়ায় শহরে পুলিশি তৎপরতা বেড়ে যায়। তাই কারফিউ ভেঙ্গে ছাত্র-জনতা শহরে নামার সাহস পায়নি। সারাদিনই জনমনে ছিল আতঙ্ক ও উৎকণ্ঠা।

২৮ জুলাই সকাল থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং ছাত্রলীগ সশস্ত্র অবস্থান নেয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মামলার ভয় দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের  গ্রেফতারের চেষ্টা করে পুলিশ। এতে করে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের মাঝে।

জনসমক্ষে আন্দোলন দৃশ্যমান না হলেও বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী জনতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে ওঠে। ২৮ জুলাই কিছু সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করে জরুরি প্রয়োজনে অফিস আদালত মাত্র ৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হয়। জরুরি সেবা ছাড়া অন্যান্য সেবা বন্ধ রাখা হয়।  অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, বৈদ্যুতিক  সেবা ও চিকিৎসা সেবার মত জরুরি সেবা চালু থাকলেও লোক সমাগম ছিল খুবই কম।

মাদারীপুর জেলা পুস্তক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এবং চেম্বার অব কমার্স-এর সদস্য অলিউল আহসান জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি স্মরণ করে বাসসকে বলেন, ‘২০২৪ সালের ২৮ জুলাই প্রায় সারাদিন কারফিউ ছিল। এর প্রভাবে শহরে লোক সমাগম হয় নি। জরুরি সেবা ছাড়া অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। সবার মাঝে  আতঙ্ক বিরাজ করছিল।’

মাদারীপুরের সচেতন নাগরিক ডা.লুৎফর রহমান ওই দিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, এদিন শহরে কারফিউ থাকায় মানুষজন ছিল কম। আমি একজন চিকিৎসক হিসেবে কর্মস্থলে আমার চেম্বারে ছিলাম। তবে সেদিন মাদারীপুর শহরে লোকসমাগম ছিল খুবই সীমিত। আমার চেম্বারে রোগীও তুলনামূলক কম ছিল।