বাসস
  ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৬:৫৩
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৭:০৩

রাজশাহীতে ২৯ জুলাই কর্মসূচি সফল করতে পরিকল্পনা করেন যোদ্ধারা

২৯ জুলাই ২০২৪, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: ফেসবুক

ওমর ফারুক

রাজশাহী, ২৮ জুলাই ২০২৫ (বাসস): জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে যত মাসের শেষ ঘনিয়ে আসছিল শিক্ষানগরী রাজশাহীতে ততই উত্তেজনা বাড়ছিল। গড়ে উঠা আন্দোলন একটি পক্ষ ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেয়। সেই আন্দোলন পুনরায় গড়ে তুলতে বেগ পেতে হচ্ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের। 

রাজশাহীর সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৯ জুলাইয়ের কর্মসূচি কীভাবে শুরু করা হবে সেই পরিকল্পনা আগের দিন করেন যোদ্ধারা। আগে দায়িত্ব পালনকারী সমন্বয়কদের স্থগিত ঘোষণা করা আন্দোলন পুনরায় চাঙ্গা করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন সমন্বয়করা গোপনে গোপনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। 

জুলাই যোদ্ধাদের চাওয়া ছিল, যেকোনো মূল্যে রাজশাহীতে আন্দোলনের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। এ নিয়ে আন্দোলনে সহায়তাকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ডানপন্থি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মিটিং করে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। 

ঠিক সেই মুহূর্তে রাজশাহী মহানগর পুলিশের দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের গ্রেপ্তারে চিরুনি অভিযান শুরু করেন।  

শেখ হাসিনার সরকারের নির্দেশে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তীব্র চাপ ছিল। তবে তার থেকে বেশি আন্দোলন দমিয়ে রাখতে ও আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের গ্রেপ্তার করে জেলে ভরতে চাপ ছিল তৎকালীন রাজশাহী সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের। 

তারা যেকোনো মূল্যে আন্দোলন দমিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছিলেন। অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও পরদিন থেকে আন্দোলন শুরু এবং পরে টানা কর্মসূচি গ্রহণ করতে নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। 

তখনও তাদের মাথায় ঝুলছিল মহানগর পুলিশের করা ৭টি মামলা। তবে ২৮ জুলাই রাজশাহীতে কোনো দৃশ্যমান কর্মসূচি ছিল না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মিশকাত চৌধুরী মিশু বাসসকে বলেন, আমাদের আগে যারা সমন্বয়ক ছিলেন তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আল্টিমেটাম দিয়ে আর আন্দোলন না করার ঘোষণা দেন। 

এরপর আমরা দায়িত্ব নিয়েই পুনরায় আন্দোলন শুরু করার চেষ্টা করি। এ জন্য ভেতরে ভেতরে ২৮ জুলাই নানা ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। ছাত্রশিবিরের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আন্দোলনের ব্যাপারে কথা হয়। ২৯ তারিখে আন্দোলন শুরু ও কারফিউ ভেঙ্গে কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস যেহেতু বন্ধ ছিল এবং কারফিউ চলছিল সে কারণে আমরা তাৎক্ষণিক কোনো কর্মসূচি করতে পারিনি। সেই মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আমাদের খুঁজছিল। 

মিশু আরো বলেন, আন্দোলন পুনরায় শুরু করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক আমাদের সহযোগিতা করেছেন। ঝুঁকি জেনেও আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করেছেন। ২৯ জুলাই কর্মসূচি সফল করা হয়। এরপর থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা মাঠে ছিলাম।