শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের কারণে দেশে ওষুধের দাম অনেক বেড়ে যাবে-এরকম একটা শঙ্কার কথা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু আসলে এতে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, যেসব ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি হয় না, সেগুলো আমদানির সঙ্গে এলডিসিতে উত্তরণের সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, যেসব ওষুধগুলোর মেধাস্বত্ব আছে এবং আমরাও উৎপাদন করছি, সেগুলোর ক্ষেত্রেও ডব্লিউটিওর বিধান অনুসারে বাংলাদেশ মেধাস্বত্ব দিতে বাধ্য নয়।
বাংলাদেশের পেটেন্ট আইনেও বিষয়টি সেভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, অর্থাৎ সেগুলো নিয়েও আমাদের চিন্তা করতে হবে না বলেও জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টারে বিশেষ সহকারী বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদেরকে জাতিসংঘের নির্ধারিত কিছু প্রক্রিয়া ফলো করতে হয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আমাদেরকে কাগজপত্র তৈরি করে জাতিসংঘে পাঠাতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘের বিশেষ টেকনিক্যাল কমিটির কাছে আমাদের কাগজপত্র মূল্যায়ন করা হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে মূল্যায়নে আমরা অনেক এগিয়ে আছি।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এনবিআর’র সংস্কার যুগান্তরকারী, এটার খুবই দরকার ছিল। বিশ্বে মোটামুটি সব দেশেই পলিসি যারা করে এবং যারা কালেকশন করেন তারা আলাদা থাকে।
কারণ এতে করে কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট থেকে যায়। কারণ আপনি নিজেই প্রসিকিউটর, নিজেই জাজ। আবার নিজেই উকিল এটা হয় না। এ জন্য সেপারেট করতে হয়। এন বি আর এর পৃথকীকরণ এ জন্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর’র অধীনে কর্মরত বিভিন্ন কাস্টমস কর্মকর্তাদের ঘুষ দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন সময় ওঠা অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, কর্মকর্তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি ধর্মীয় মূল্যবোধ কঠিন ভাবে পালন করতে হবে। তবেই ঘুষ দুর্নীতি থেকে অনেকটা ফিরে আসা সম্ভব।
জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ অর্থ পাচারকারীদের হুশিয়ার করে বলেন, একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে, যারা ভবিষ্যতে অর্থ পাচার করবে, তাদের ঘুম হারাম করে ফেলব।
ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের কাজ করার আগে ১০ বার চিন্তা করতে বাধ্য হবে। অর্থ পাচারের আর দুঃসাহস পাবে না। এটার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চেয়ারম্যান করে একটা কমিটি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিপ্লবের কারণে কোন দেশে ক্ষমতা পরিবর্তন হলে জিডিপি কমে নেগেটিভে চলে গেলে বেকারত্ব বেড়ে যায়, ক্রয় ক্ষমতা কমে যায়। দারিদ্র্যতা বাড়ে, মৃত্যুর হার বাড়ে, সুইসাইডের হার বেড়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে এর একটাও হয়নি। বাংলাদেশের জিডিপি নেগেটিভে যায় নাই।
কিছুটা প্রবৃদ্ধি কমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি তেমন না বাড়লেও আমাদের এখানে দারিদ্র্যতার হারে অন্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
তিনি বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক টিম সফল। আমরা একমাত্র দেশ, যারা জোর গলায় বলতে পারব যে গণঅভ্যুত্থানের পরের এমন পরিস্থিতিতেও আমরা ভালো আছি।