শিরোনাম

মোশতাক আহমদ
ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার অতীতের সরকারগুলোর সমালোচনা করে বলেছেন, শিক্ষকদের প্রমোশনে উদ্যোগের ঘাটতি ছিল। সেসব ঘাটতিগুলো পূরণ করে প্রায় তিন হাজার শিক্ষককে প্রমোশন দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এবার সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ৯৯৫ জনকে। সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক হয়েছেন ১৮০০ জন। এর আগে লেকচারার থেকেও সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
ডক্টর সি আর আবরার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রথম দিনই আমি এটা বলেছিলাম যে শিক্ষকদের মর্যাদা এই সরকারের একটি অন্যতম প্রায়োরিটি ইস্যু হিসেবে আমরা দেখবো।
তিনি বলেন, আমি এটাও বলেছিলাম, আর্থিকভাবে যে আমরা রেমুনারেশন শিক্ষকদের দিই সেটা আরো অনেক বেশি, এটা হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সম্পদের অপ্রতুলতা থাকার কারণে যা তাদের প্রাপ্য সেটা আমরা দিতে পারি না। কিন্তু একই সাথে সাথে যেটা আমরা তাদেরকে দিতে পারি তা হলো সম্মান এবং তাদের মর্যাদার স্বীকৃতি, এবং এটা আমরা দিতে চেষ্টা করেছি।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, অনেক বছর ধরে শিক্ষকদের প্রমোশনটা আটকে ছিল এবং লেকচারার থেকে সহকারী অধ্যাপক হওয়ার প্রক্রিয়াটির উপরে কোর্টের একটা নিষেধাজ্ঞা ছিল অথবা কোর্টের মোকদ্দমার বিষয় ছিল, তাই এ ব্যাপারে আমাদের করণীয় তেমন ছিল না। পরবর্তীকালে সেই নিষেধাজ্ঞা যখন চলে গেল তার সাথে সাথেই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে এই প্রমোশনটা আমরা ইফেক্ট করবো, যার ফলে প্রায় দুই হাজারের মতো শিক্ষক পদোন্নতি পেলেন। এদের মধ্যে ন্যূনতমরা বোধহয় আট বছর ধরে প্রমোশনের অপেক্ষা করছিলেন। আমরা তাদের সমস্যার সমাধান করতে পেরেছিলাম।
উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষকরা বারো বছর পর্যন্ত প্রমোশনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, কেউ কেউ ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। এখন তাদের প্রমোশনের পর আমার ভালো লেগছে। কারণ আমি নিজেও একজন শিক্ষক।
উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষকদের উন্নয়নে আমি আমার কমিটমেন্ট সম্পাদন করতে পেরেছি। এবার সহকারী থেকে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি আমরা দিতে পেরেছি। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা এই প্রমোশনগুলো নিশ্চিত করতে পারলেও ভালো হতো, কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি।
উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি শিক্ষকদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১০/১২ বছর যে দেরি হয়েছে এই দেরিটা হবার কোনো কারণ ছিল না। কারণ বছরের পর বছর যখন শিক্ষকরা তাদের নিজেদের প্রাপ্য মর্যাদা, তাদের যে প্রমোশন, এগুলো যদি না পান, তাহলে এর থেকে বড় ডিসইনসেন্টিভ আর কোনো কিছু নেই।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের প্রমোশনের সংবাদ আমি শুনেছি। তারা এতে আনন্দিত হয়েছেন এবং আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমি মনে করি, এটি আমাদের সিস্টেমের একটি সীমাবদ্ধতা যে আমরা সময়মতো এটি দিতে পারিনি, তবুও দিতে পেরেছি এবং প্রমোশনটি হয়েছে- এতে আমি আনন্দিত। ভবিষ্যতেও যেন এ ধরনের ন্যায্য দাবি আটকে না যায়, সেদিকে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখা দরকার।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা এই ধরনের অন্যায্যতা শিকার যেন না হন আমার পরবর্তী সরকারের কাছে সেই আহ্বানই থাকবে।