বাসস
  ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৫

যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইসির প্রতি আস্থা আছে: মিয়া গোলাম পরওয়ার

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি

ঢাকা, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে কমিশনের প্রতি তার দলের পূর্ণ আস্থা আছে।

আজ সকালে সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা, কোন কোন বিষয়ে তথ্যের কিছু অস্পষ্ট অবস্থা পরিষ্কার করার জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমরা আজকে বৈঠক করেছি এবং সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে কমিশন তফসিল ঘোষণা ও নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের যে কথা জানিয়েছেন, তাতে আমরা তাদের উপরে আস্থা রাখতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি, কমিশনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার কোনো ধরনের আশঙ্কা আমরা করছি না।

তিনি আরও বলেন, কারো প্রতি অনাস্থার কারণে আমরা এখানে আসিনি। জাতি মনে করে, কমিশনের দেওয়া কমিটমেন্ট অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময়টা যেন পার হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টাকে পরিষ্কার করার জন্য আজকের এই বৈঠক।

নির্বাচন কোনো কারণে পিছিয়ে যেতে পারে, সে আশঙ্কা আমরা করি না। কারণ নির্বাচনের সঙ্গে আইনের প্রশ্ন জড়িত আছে, জাতির প্রত্যাশা জড়িত আছে। এবং এটি একটি সাংবিধানিক বিষয়ও বটে, বলেন তিনি।

আজকের বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, কমিশন আমাদের জানিয়েছে যে, তারা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে আয়োজন করবেন এবং এই সপ্তাহের মধ্যেই তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত তাদের হয়েছে, তাই আশা করা যায় এ সপ্তাহের মধ্যেই তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন এবং তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পবিত্র রমজানের পূর্বেই জাতীয় নির্বাচন হবে। সেই তারিখটির জন্য দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

আজকের বৈঠকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রসঙ্গ এবং ভোট কেন্দ্রগুলোতে বিজিবি. সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, যেটাকে আমরা লেভেল প্লেইং ফিল্ড বলছি, সেটিও আলোচনায় এসেছে। প্রশাসনে কর্মরত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ইলেকশনের সাথে যুক্ত অফিসারদের নিরপেক্ষতা নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে, সেই বিষয়ও ছিল। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযানকে ফলপ্রসূ করা এবং ৫ আগস্টের পর থেকে সারাদেশের থানাগুলো থেকে লুটপাট হয়ে যাওয়া অস্ত্র কী পরিমাণ উদ্ধার হলো, সেটা জানতে চেয়েছি। সেইসঙ্গে অবৈধ অস্ত্রধারীরা, যারা নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে পারে, তাদের গ্রেফতার অভিযানের ব্যাপারে আমাদের আলোচনা ইস্যু ছিল।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের সহজভাবে ভোট প্রদানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা নিয়ে আমরা কমিশনকে জানিয়েছি, যেহেতু নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের জন্য এটি অন্যতম ইস্যু। একটি জাতীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন গণতন্ত্রের শান্তি-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু হতে পারে না। এতে অর্থ ব্যয় হওয়া, প্রয়োজনে অনেক ডোনার এজেন্সি, ডোনার কান্ট্রির কাছে সহযোগিতা চাওয়া যায়।

তিনি বলেন, কিছু তথ্য প্রমাণ সুনির্দিষ্টভাবে আমরা ওনাদের সামনে তুলে ধরে বলেছি যে এই অবস্থা থাকলে এটাকে আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হিসেবে গ্রহণ করব না, তাই এ সকল সমস্যা নিরসনে সুনির্দিষ্টভাবে আপনাদেরকে পদক্ষেপ নিতে হবে। তফসিল ঘোষণার পর সব কিছু কমিশনের এখতিয়ার চলে আসবে, তখন প্রশাসনকে যথাযথভাবে নিরপেক্ষ রাখা, প্রয়োজনে প্রশাসনিক রদবদল করা যাবে। আর যে রদবদল ইতোমধ্যে হয়েছে, সেখানে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তাদের জানানোর সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাদের কথা দিয়েছেন।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, প্রচার সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, বাংলাদেশ ল-ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দীন সরকার।