শিরোনাম

ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): দেশের খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার কমাতে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর উদ্যোগে আজ ‘বাংলাদেশে ফসলের উৎপাদন হ্রাস না করে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে পরিবেশবান্ধব জৈব কৃষিতে রূপান্তর’ শীর্ষক এক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের লাগামহীন ব্যবহার মাটির উর্বরতা হ্রাস, পরিবেশ দূষণ, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছে।
সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, আমাদের কৃষকরা অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অতিব্যবহার কমাতে কৃষকদের সামাজিক আচরণ পরিবর্তনে আমাদের কাজ করতে হবে। জৈব কৃষি পদ্ধতিতে (অ্যাগ্রোইকোলজিক্যাল) উৎপাদন কমে না বরং ক্ষেত্রবিশেষে উৎপাদন বাড়ে। তবে জৈব কৃষি সম্প্রসারণে আমাদের একটি রোডম্যাপ করা দরকার। এটি রাতারাতি সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন বলেন, এক সময় দেশের কৃষকরা উৎপাদন বাড়াতে অতিমাত্রায় রাসায়নিক সারের ব্যবহারের দিকে ঝুঁকেছিল। কৃষিতে দীর্ঘমেয়াদি টেকসইতা নিশ্চিত করতে জৈব কৃষি পদ্ধতির বিকল্প নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা বলেন, বর্তমানে দেশব্যাপী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ল্যাবে পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থার আওতাভুক্ত কৃষকরা সহজে মাটি পরীক্ষা করে সার সুপারিশ কার্ড সংগ্রহ করতে পারে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. শেখ তানভীর হোসেন।
তিনি বলেন, দেশে গত ৫০ বছরে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার মাটি ও পরিবেশকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। গত অর্থবছরে সরকার মোট ২৪ হাজার কোটি টাকা কৃষিতে ভর্তুকি দিয়েছে, যার ৭৫ শতাংশই ব্যয় হয়েছে রাসায়নিক সারে।
এছাড়া, খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় পরিবেশ, সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত অপ্রদর্শিত ব্যয় দেশের মোট জিডিপির প্রায় ১৩ শতাংশ। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তিনি জাতীয় কৃষি নীতি পুনর্বিবেচনা, নীতিগত দ্বৈততা দূরীকরণ এবং জৈব কৃষি সম্প্রসারণে নীতি কাঠামো প্রণয়নের সুপারিশ এবং জৈব সার উৎপাদনে বৃহত্তর বিনিয়োগে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কৃষি সম্প্রসারণে নিয়োজিত গবেষক এবং কৃষিখাতে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।