বাসস
  ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৩

মালয়েশিয়া হতে পারে বাংলাদেশি মেডিকেল ট্যুরিস্টদের নতুন গন্তব্য

ছবি: বাসস

চট্টগ্রাম, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ান হাই কমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা বিন ওসমান বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেডিকেল ট্যুরিস্ট বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার উন্নত ও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা হতে পারে বাংলাদেশি মেডিকেল ট্যুরিস্টদের নতুন গন্তব্য।

আজ সোমবার বিকেলে দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মালয়েশিয়ান হাই কমিশনার এ কথা বলেন। নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ কনফারেন্স হলে চেম্বার প্রশাসক ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী’র সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
 
হাই কমিশনার মোহাম্মদ শুহাদা বিন ওসমান বলেন, গত আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরে পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। তাছাড়া বাংলাদেশ হচ্ছে আশিয়ানভূক্ত দেশের বাহিরে মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশের প্রবাসীরা ছাড়াও প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। উভয়দেশের বিজনেস টু বিজনেস এবং পিপল টু পিপল রিলেশন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
হাই কমিশনার আরও বলেন, বাংলাদেশ হালাল সনদ গ্রহণের মাধ্যমে হালাল পণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে। চট্টগ্রামের ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনা করে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের টেলিকমিউনিকেশন, সিকিউরিটি, হেলথ কেয়ার, ম্যানুফ্যাকচারিং ও এনার্জি সেক্টরে বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার প্রশাসক নূরুল্লাহ নূরী বলেন, মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত মোট প্রবাসীর প্রায় ৩৭ শতাংশ বাংলাদেশী। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মালয়েশিয়া বাংলাদেশে প্রায় ২০৬.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৩৮.২ মিলিয়ন ডলার পণ্য আমদানি করে। 

তিনি বলেন, দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু, দু’দেশের মধ্যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই বাণিজ্য ঘাটতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত বিশেষ বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বে-টার্মিনাল, বিভিন্ন রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে হালকা প্রকৌশল, ইলেক্ট্রনিক্স, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিপিং, লজিস্টিক্স ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
 
ঢাকা-চট্টগ্রাম-কুয়ালালামপুর সরাসরি ফ্লাইট চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করে অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার পামওয়েলের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। আশিয়ানে বাংলাদেশের অন্তর্ভূক্তকরণে মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, রাবার এবং শিপিং সেক্টরে মালয়েশিয়ান বিনিয়োগকারীদের একক ও যৌথ বিনিয়োগের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে নিয়মিত বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা। 

চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও থাইল্যান্ডের অনারারি কনসাল আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এম. এ. ছালাম, মালয়েশিয়ার অনারারি কনসাল মোহাম্মদ আক্তার পারভেজ, চেম্বারের সাবেক পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, পান রপ্তানিকারক এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. একরামুল করিম চৌধুরী, পার্ক শিপিং এর এমডি হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, ট্রাস্টেড শিপিং লাইন্স লি.’র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ওয়াহিদ আলম ও উইম্যান চেম্বারের পরিচালক আমিনা শাহিন বক্তব্য রাখেন।