শিরোনাম

ঢাকা, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) এবং তার স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মোজাম্মিল হোসেনের নেতৃত্বে সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম এবং উপসহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার সমন্বয়ে গঠিত অনুসন্ধানকারী দল ২০০৮-০৯ সাল থেকে সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত মায়া দম্পতির সম্পদ ও ব্যাংক লেনদেন বিশদভাবে পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে এসব মামলা দায়ের করে।
দুদকের মতে, সাবেক এই সংসদ সদস্য ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ১ কোটি ৮২ লাখ ৫৫ হাজার ২৬১ টাকা সমমূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন। তার বৈধ আয়ের পরিমাণ ৪ কোটি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৯৩৭ টাকার বিপরীতে অনুসন্ধানে মোট সম্পদের মূল্য পাওয়া গেছে ৬ কোটি ১৮ লাখ ৪১ হাজার ১৯৮ টাকা।
এছাড়া মায়ার নামে ১৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা হয়েছে ২৫৫ কোটি ২৫ লাখ ১১ হাজার ৭৩১ টাকা, আর উত্তোলন করা হয়েছে ২৫৫ কোটি ১২ লাখ ২০ হাজার ২০৪ টাকা-যা দুদকের ভাষায় ‘অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন’।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা; দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে মায়ার স্ত্রী পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, পারভীন চৌধুরী স্বামীর প্রভাব ও সহায়তা ব্যবহার করে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৮ কোটি ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৬৯ টাকা সমমূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার বৈধ আয়ের পরিমাণ ৫ কোটি ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৮০২ টাকার বিপরীতে মোট প্রাপ্ত সম্পদের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ১৭১ টাকা।
এছাড়া তার নামে ৩৬টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমা হয়েছে ১১১ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার ৪১১ টাকা এবং উত্তোলন হয়েছে ১১১ কোটি ৪৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭১২ টাকা।
পারভীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় আরেকটি পৃথক মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দুদক জানায়, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার, ঠিকাদারি কমিশন, সরকারি প্রকল্পের বরাদ্দ বাণিজ্য, দলীয় পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করে তা দেশ-বিদেশে লুকানোর চেষ্টা করেছেন। এসব অপরাধ, ঘুষ, দুর্নীতি ও মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের উৎস গোপন ও আড়াল করার সুস্পষ্ট চেষ্টার প্রমাণ বলে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে।