শিরোনাম

ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫(বাসস): এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন,আমরা এমন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করবো যেখানে মানুষ আস্থা রাখতে পারবে। যা ফ্যাসিবাদের বিকল্প শক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে। যে দল বিকল্প সংসদ হয়ে উঠবে। রাজনৈতিক অঙ্গনে চিন্তাধারার পরিবর্তন আনাই হবে আমাদের লক্ষ্য।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, এবি পার্টি ও আপ বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে আজ সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘স্বল্প আস্থার সমাজে সংস্কার ও নির্বাচনী ঐক্যের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় নতুন রাজনীতি দাঁড়াতে না পারার কারণ খোঁজার আহ্বান জানিয়ে মঞ্জু আরও বলেন, তথাকথিত দখলদায়িত্ব নেয়ার কালচার আমাদের রাজনীতি কলুষিত করেছে। আমাদের এই দখল সংস্কৃতি বদলানোর জন্যই নতুন রাজনীতি দরকার।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি এডভোকেট হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট রাষ্ট্র চিন্তক ও অর্থনীতিবিদ সেয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক ড. মুশতাক হোসেন খান।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) অধ্যাপক আব্দুল ওহাব মিনার, আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মো. হিজবুল্লাহ, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার জোবায়ের আহমদ ভুঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভুইয়া, আপ বাংলাদেশের প্রধান সংগঠক নাঈম আহমাদ।
প্রধান আলোচক অধ্যাপক মুশতাক হোসেন বলেন, সমাজকে পরিবর্তন করতে যে জাতি জীবন দিতে পারে সেই জাতি অনেক শ্রদ্ধার। নতুন বন্দোবস্ত চুক্তি করে হয় না, কারণ কায়েমি স্বার্থবাদীরা নতুন বন্দোবস্ত মেনে নেয় না। তবে নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ইংল্যান্ডের টরি পার্টির বিরুদ্ধে দুর্বল রাজনৈতিক দলগুলোর বিপ্লবের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানেও সমঝোতা হয়নি, সংগ্রামের মধ্য দিয়েই জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, আস্থাহীনতার কারণেই অলিগার্করা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে। আস্থাহীনতা কমাতে হলে সামাজিক ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, যেন অপরাধ করলে সামাজিকভাবে বয়কট করা হয়। অনিয়ম করলে তাকে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয়ভাবে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
শহিদ উদ্দিন স্বপন বলেন, আইনের শাসন না থাকা ও বৈষম্যের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে আস্থাহীনতা রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সমাজ বিপ্লবের সম্ভাবনা তৈরি হলেও রাজনৈতিক নেতাদের পুরোনো চিন্তাচেতনার কারণে মানুষ আশাহত হয়েছে। যেটুকু অগ্রগতি গত ১৫ মাসে হয়েছে তাকে ভিত্তি ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সৈয়দ হাসিব উদ্দিন এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলোকে গরম বক্তব্য না দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে সংস্কার চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ছাড় না দিয়ে নিজেদের মত চাপিয়ে দিলে সেটা স্বৈরাচারকে তরান্বিত করবে। আর এ কারণে রাষ্ট্র দুর্বল হলে সবার জন্য বিপদ নেমে আসবে। তাই ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, আমরা জীবিত থাকতে আওয়ামী লীগ এদেশে রাজনীতি করবে সেটি হতে পারে না। অহমিকা ছেড়ে সব দলকে ঐক্যের পথে আসার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ডায়নোসর অনেক বড় ছিল কিন্তু আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আরেফিন মো. হিজবুল্লাহ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাঠামোগত ফ্যাসিবাদ সংকটকে তরান্বিত করছে। যেসব জায়গায় ফ্যাসিবাদ তৈরি হওয়ার আশংকা আছে, সেগুলো বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক ঐক্যের সম্ভাবনা নষ্ট হওয়ার প্রধানতম কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার অভাব।
ব্যারিস্টার জোবায়ের বলেন, টেকসই রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য রাজনৈতিক ইকো সিস্টেম জরুরি। সভায় তিন দলের ঐক্যবদ্ধ পথ চলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।