শিরোনাম

ঢাকা, ১ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস আগামীকাল। প্রতি বছর ২ নভেম্বর জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস পালিত হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ ও সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির উদ্যোগে আগামীকাল দিবসটি দেশব্যাপী পালন করা হবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘রক্তদানে হয় না ক্ষতি, চোখ ছুঁয়ে যাক চোখের জ্যোতি’।
বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের পথিকৃৎ ‘সন্ধানী’। রক্তদানের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি মানুষের চক্ষু ব্যাংক হিসেবেও কাজ করে। মৃত্যুর আগে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত চক্ষুদানের বিষয়ে উৎসাহ প্রদান করে থাকে সন্ধানী, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ব্যবহার করতে পারে সেই চোখ।
১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ডিএমসিএইচ ব¬াড ব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মতো স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৫ সালে সন্ধানী আয়োজিত প্রথম স্বেচ্ছায় রক্তদান অনুষ্ঠানটিকে স্মরণীয় করে রাখতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২ নভেম্বরকে ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ ঘোষণা করেন।
সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির মহাসচিব ডা. মোহাম্মদ মনির হোসেন জানান, অন্ধত্ব বাংলাদেশের অন্যতম সমস্যা। একজন অন্ধ ব্যক্তি তার পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বোঝা স্বরূপ। দেশে অন্ধ জনসংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। এর মধ্যে ৫ লাখের মতো কর্ণিয়াজনিত অন্ধ। প্রতিবছর আরো নতুন করে যোগ হচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি দেশে কর্ণিয়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সরবরাহকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান। সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৮৮ টি কর্ণিয়া সংগ্রহের মাধ্যমে ৩ হাজার ৫২৫ জন অন্ধ মানুষের চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে পেরেছে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ মৃত ব্যক্তি ও বেওয়ারিশ মৃতদেহ থেকে কর্ণিয়া সংগ্রহ করে আসছে সন্ধানী। সংগৃহীত কর্ণিয়া সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর চোখে প্রতিস্থাপন করে আসছিল তারা। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতিস্থাপিত সব কর্ণিয়াই সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির মাধ্যমেই সংগৃহীত। একজন মানুষের কর্ণিয়া আরেকজন কর্ণিয়াজনিত অন্ধ মানুষের চোখে প্রতিস্থাপন করলে সেই অন্ধ মানুষটি পৃথিবীর আলো দেখতে পায়— এই সত্য ও তথ্যটি সন্ধানী আমাদেরকে এ দেশে প্রথম দিয়েছে। এই সত্য ও তথ্যকে ১৮ কোটি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে অবশ্যই কাজটি অনেক সহজ হয়ে যাবে এবং কর্ণিয়া প্রতিস্থাপন করে দিয়েও এই দেশ বিশ্বে এক নজির স্থাপন করতে পারবে।
দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ৮ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি র্যালি বের করা হবে। র্যালিটি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসাপাতাল চত্বরে গিয়ে শেষ হবে।
এদিকে সকাল ৯ টায় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসাপাতালের লেকচার হলে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায়) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফজলুল হক কাশেম।