শিরোনাম

ঢাকা, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) জাতীয় সঞ্চয়পত্র (এনএসসি) জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত তিনটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
একটি প্রতারক চক্র বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কিনে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের এনএসসি সিস্টেম জালিয়াতি করে প্রায় ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
একই চক্র পরবর্তীতে আরও ৫০ লাখ টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করলে কর্তৃপক্ষ তা সফলভাবে আটকে দেয়।
প্রাথমিক তদন্তে দৃঢ়ভাবে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে, এ জালিয়াতি ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমের নিরাপত্তা ভঙ্গ সংঘটিত হয়েছে, বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শহরিয়ার সিদ্দিকী জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কর্মকর্তাদের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই প্রতারণাটি ঘটানো হয়েছে।
তদন্তে আরও জানা গেছে, প্রকৃত সঞ্চয়পত্রধারীরা টাকা উত্তোলনের কোনো আবেদন করেননি এবং তাদের মোবাইল ফোনে কোনো ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ডও (ওটিপি) পাননি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে গত বৃহস্পতিবার ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনেন এক ব্যক্তি। তার ব্যাংক হিসাবটি আছে অগ্রণী ব্যাংকের জাতীয় প্রেস ক্লাব শাখায়। চার দিনের মাথায় গত সোমবার এই সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হয় এবং টাকা নেওয়া হয় এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার অন্য এক ব্যক্তির হিসাবে। ওই টাকা জমা হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যে ব্যাংকটির রাজধানীর শ্যামলী শাখা থেকে তুলে নেওয়া হয়।
একই প্রক্রিয়ায় চক্রটি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০ লাখ ও এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এলে তা আটকে দেওয়া হয়।
ঘটনার পরপরই মতিঝিল অফিসের তিন কর্মকর্তা, যাদের পাসওয়ার্ড অ্যাক্সেস ছিল, তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সঞ্চয়পত্র লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত তাদের কম্পিউটারও জব্দ করা হয়েছে।
সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, যাদের হিসাবে অর্থ গেছে এবং যারা জালিয়াতিতে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে মামলা করা হবে। সঞ্চয়পত্রের সিস্টেম যারা পরিচালনা করেন, তাদের কারো পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে এই জালিয়াতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ নিয়ে মতিঝিল থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সিআইডির কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত আছেন।