বাসস
  ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২৮

বরেন্দ্র অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

ছবি : বাসস

রাজশাহী, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বরেন্দ্র অঞ্চলের পানিসঙ্কটাপন্ন এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা ও অভিযোজনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবিকায় গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবশ্যক।

আজ নগরীর হোটেল ওয়ারিশানে ‘জলবায়ু সহনশীলতা ও অভিযোজন’ শীর্ষক এক অংশীজন পরামর্শ সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহায়তায় অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিএডি) তাদের ‘কালটিভেটিং চেঞ্জ প্রকল্প’-এর অংশ হিসেবে এই সভার আয়োজন করে।

সভায় জলবায়ু সহনশীলতার বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও মতামত তুলে ধরেন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক দীপকেন্দ্র নাথ দাস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক এটিএম গোলাম মাহবুব, সহকারী পরিচালক কবির হোসেন এবং বন বিভাগের উপ-রেঞ্জার আমজাদ হোসেন।

‘কালটিভেটিং চেঞ্জ’ প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী সুব্রত কুমার পাল মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রকল্পের লক্ষ্য, কৌশল ও চলমান কার্যক্রম তুলে ধরেন।

অধ্যাপক দীপকেন্দ্র নাথ দাস খরা মোকাবিলায় প্রথাগত ও আধুনিক কৃষি পদ্ধতির সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, কৃষকদের চিরাচরিত চাষাবাদ পদ্ধতির সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটাতে হবে। পানি সংরক্ষণ সবার দায়িত্ব, যা ফসল উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

তিনি টেকসই কৃষি, স্থানীয়দের অভিজ্ঞা ও পানির সঠিক ব্যবস্থাপনাকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করেন।

গোলাম মাহবুব বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনের ক্ষেত্রে ব্যক্তি ও সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন। এ ধরনের পরামর্শ সভা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়ক হবে।

বরেন্দ্র অঞ্চলকে জলবায়ু সহনশীল করতে হলে সব খাতের যৌথ অংশগ্রহণ অপরিহার্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনে সব পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের ঐতিহ্যবাহী কৃষি অভিজ্ঞতা জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজে লাগানো উচিত।

নারী কৃষক অলিভিয়া বিশ্বাস তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, আগে আমরা শুধু একটি ফসল উৎপাদন করতাম। এখন আমরা বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করি, যা খরার সময়েও আমাদের জীবিকা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।

তিনি বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে খরা আরও তীব্র হচ্ছে, যা খাদ্য উৎপাদন ও স্থানীয় জনগণের জীবিকাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।